গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সম্প্রতি কিছু ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজশে সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করে তৌহিদ আফ্রিদি এবং তার বাবাকে গ্রেপ্তার করিয়েছেন। নুরুল হক নুরের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ঘটনা একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ, যেখানে নগদ অর্থের লেনদেন বা শেয়ার লিখে নেওয়ার মাধ্যমে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এই চাপের মুখে পুলিশি অভিযানে অবৈধভাবে তাদের আটক করা হয়েছে, যা সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করছে।
নুরুল হক নুর আরও বলেন, খুব সম্প্রতি যাত্রাবাড়ী থানায় ছাত্র হত্যা মামলায় এক বছর পরে তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে প্রশ্ন ওঠে, মামলার আদৌ সত্যতা রয়েছে কি না, এবং তারা কি এই মামলার অপরাধী? তিনি বলেন, যদি তৌহিদ আফ্রিদি বা তার বাবার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থেকে থাকে, তাহলে সেগুলোর ভিত্তিতে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তিনি অভিযোগ করেন, এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় ও ভিত্তিহীন মামলার মাধ্যমে প্রশাসন নিরীচ্ছে হয়রানি করছে, যা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে অসুস্থ করে তুলছে। যারা এই সব ঘটনার সঙ্গে সরাসরি কোনোভাবে জড়িত নয়, তাদেরকেও অকারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এমনকি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর রিপোর্টেও এটাই দেখানো হচ্ছে যে, রাজনৈতিক দমন-পীড়নের নামে অনেক সময় সঠিক অপরাধীদের না পেয়ে অবৈধভাবে সাধারণ মানুষকেও হয়রানি করা হচ্ছে।
নুরের মতে, সরকারের উপর দেশের আর্থ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে চাপ বাড়ছে, এবং এতে সত্যিকার অপরাধীদের মধ্যেও বিচারব্যবস্থা অন্ধকারে পড়তে পারে। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই ভুল পদক্ষেপগুলো একসময় একাত্তর সালেও দেশে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার পথ সুগম করে দিতে পারে। এর ফলে, সাধারণ মানুষের জীবন আরও অস্থির ও অন্ধকার হয়ে উঠতে পারে।
সবশেষে, তিনি জোর দিয়ে বলেন, যারা এই সব প্রভাবশালী চাপ সৃষ্টি করে দেশের নিরাপত্তা ও স্বস্তি নষ্ট করতে চাইছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করা উচিত। অবিলম্বে এর নেপথ্যের চক্রান্ত চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যেন কেউ আইন হাতে তুলে না নেয় বা অবিচার ছড়াতে না পারে।
অপরদিকে, জুলাই মাসের আন্দোলনের সময় যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে তৌহিদ আফ্রিদির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, তৌহিদ আফ্রিদি একজন প্রভাবশালী কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং মাই টিভির পরিচালক হিসেবে দেশের বিভিন্ন আন্দোলনে ভূমিকা নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে গুলি চালানোর মাধ্যমে একজন নিহতের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, এই উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের ফলে স্থানীয় আসামিরা গুলিবর্ষণ করে মারাত্মক ক্ষতি করেছেন।
২৬ জুলাই পুলিশ তৌহিদ আফ্রিদিকে বরিশাল থেকে গ্রেপ্তার করে। মামলার নিরিখে উল্লেখ করা হয়, ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনের সময় নিহত আসাদুল হকের বিনাসের জন্যই এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এর আগে, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সেই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় নাসির উদ্দিন সাথী ও তৌহিদ আফ্রিদির নাম রয়েছে। গত ১৭ আগস্ট তাদের গুলশান থানায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁরা আদালত থেকে রিমান্ডে যান, এবং রিমান্ড শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।