বাংলাদেশের প্রখ্যাত সংবিধানপ্রণেতা ও গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন সতর্ক করে বলেছেন, আমাদের দেশের সাংবিধানিক মূলনীতি থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছি। তিনি বলেছেন, সংবিধানকে সম্মান ও অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে, তবে দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেই পথে হাঁটছি না। সোচ্চার বক্তৃতায় ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের শাসনব্যবস্থা ও নেতৃত্বের মধ্যে বিজ্ঞানের মতোই মূলনীতি ভুলে যাওয়া, চরমভাবে অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও, দেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংবিধানের মৌলিক বিষয়গুলোকে বিতর্কের বাইরেও রাখতে হবে, যাতে দেশবাসী তাদের মৌলিক অধিকার স্বাধীনভাবে ভোগ করতে পারে। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায়, সংবিধান ও শাসনব্যবস্থার শেকড়ের মূলনীতিগুলো অক্ষরে অক্ষরে মান্যতা না পাওয়ায়, সমাজে সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে। আইনজীবীরা নিজেদের বিভাজন ও অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সংবিধানের মূলনীতি রক্ষা করতে পারছে না—এতে দেশের চলমান সংকটের গভীর কারণ নিহিত। ড. কামাল বলেন, সংবিধানপ্রসঙ্গে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাদের দায়িত্ব হল মূলনীতি মেনে সচেতনভাবে কাজ করা। তাদের যদি দায়িত্বে অবহেলা করে শপথভঙ্গ বা দায়িত্ব থেকে সরে যান, তবে দেশের শাসনব্যবস্থা ঠিকভাবে কাজ করবে না। তিনি আরও বলেন, দেশকে সুশাসন ও সাংবিধানিক শাসনে নিয়ে যেতে হলে একেবারে মৌলিক ও অপরিহার্যভাবে সংবিধানের মূলনীতি মেনে চলার বিকল্প নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে এবং দায়িত্বে অবহেলা বা অপব্যাখ্যার মাধ্যমে মূলনীতিকে ক্ষুণ্ণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আলোচনায় উঠে আসে, সংগঠন ও আইনশৃংখলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঐক্য ও দায়িত্ববোধ জোরদার না হলে, দেশের সংকট অব্যাহত থাকবে। এ জন্য প্রয়োজন, যারা দায়িত্বে আছেন তারা যেন শপথ অনুযায়ী সংবিধান পালন করেন। প্রয়োজনে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, কারন শপথ ভঙ্গের মাধ্যমে দেশের আইন ও সংবিধান দুর্বল হয়ে পড়ে। ড. কামাল হোসেন强调 করেন, দেশের সুশাসন ও সাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য মতভেদ থাকলেও, মৌলিক ও মূলনীতিগুলোর ব্যাপারে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি কি কি বিষয় নিয়ম পালন হচ্ছে না, তা শনাক্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার উপর জোর দেন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত ব্যক্তিরা, যেমন বিএনপি ও বার কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা, সংবিধান বিশেষজ্ঞরা এবং অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্তরা।