রবিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় কমপক্ষে ৮৬ জন নিহত এবং আরও ৪৯২ জন আহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার সন্ধ্যাবেলা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। নিহতদের মধ্যে ৫৮ জনই প্রাণ হারিয়েছেন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে, আর বাকি ২৮ জন নিহত হয়েছেন খাদ্য সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলির শিকার হয়ে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার দেড়শো’র বেশি হাসপাতালে ৮৬টি মরদেহ এবং ৪৯২ জনকে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও লোকবল না থাকার কারণে তাদের উদ্ধার এখনো সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের অভিযান চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এই অভিযানে মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২,৭৪৪ জনে। আহত হয়েছেন অনেকে এক লাখ58 হাজার ২৫৯ জন। গাজার উপত্যকায় ইরান সমর্থিত হামাসের বিরোধী অবস্থানের জন্য বহু মাস ধরেই চলছে এই যুদ্ধ। গত জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল ফের গাজায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে। এর প্রকট ফল হিসেবে পাঁচ মাসের মধ্যে নিহতের সংখ্যা এখন ১০,৯০০ এবং আহতের সংখ্যা ৪৬,২১৮ জনে পৌঁছেছে। এ সমস্যা আরও জটিল হয়ে উঠেছে, কারণ গত মে থেকে খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহের জন্য যাওয়ার ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। শুধু মে মাসে থেকে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১২৩ জন নিহত এবং ১৫ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে আক্রমণ চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে রাখে। এর জবাবে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ব্যাপক অভিযান চালায়। বছরের পর বছর চলা এই সংঘর্ষে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি হলেও, এখনও অনেক জিম্মি মুক্তি পায়নি। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার গাজায় সেনা অভিযান বন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েল আদালতেও বিবরণ জমা দিয়েছে — তবে নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে দুর্বল ও অকার্যকর করে তুলতে এবং জিম্মিদের ফিরে পাওয়ার জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।