বাংলাদেশ সরকার নয়টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনৈতিক অবনতি, অনিয়ম, লুটপাট এবং ব্যবস্থাপনার অব্যবস্থাপনা দ্বারা গভীরভাবে সমস্যাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বিশ্লেষণে দেখছে যে, আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে অক্ষম, উচ্চ খেলাপি ঋণ এবং মূলধনের অপ্রতুলতার কারণে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘অব্যবহারযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের আলোচনায় এসব ব্যাংকবিহীন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গভর্নরের অনুমোদন নিয়ে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে এবং ধাপে ধাপে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্ধের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানিয়েছে, ক্ষুদ্র আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া সবচেয়ে অগ্রাধিকার পাবে। এর জন্য সরকারের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেজুলেশন ডিপার্টমেন্ট গভর্নরের অনুমতি নিয়ে অবসায়নের প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে।
প্রক্রিয়া শুরু হলে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের ২০২৩ অনুযায়ী লাইসেন্স বাতিল, প্রয়োজনীয় সব তথ্য ব্যাংকের রেজুলেশন বিভাগে পাঠানো হবে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র আমানতকারীরা যাতে তার অর্থ ফিরে পান, সেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। বর্তমানে যে কর্মীরা এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত, তারাও চাকরির নিয়ম অনুযায়ী সুবিধা পেয়ে থাকবেন বলে জানা গেছে।
নির্বাচিত এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে— পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, আভিভা ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
এমন সিদ্ধান্তে অর্থনৈতিক স্থিরতা বজায় রেখে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের অধিকার রক্ষা ও ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করা হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।