বিদেশি শিক্ষার্থী ও সংবাদমাধ্যমকর্মীদের জন্য মার্কিন ভিসার মেয়াদ সংক্রান্ত এক নতুন প্রস্তাবের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাদের জন্য। মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এখন থেকে শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী এবং সাংবাদিকদের ভিসার মেয়াদ সীমিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পরিস্থিতির পরিবর্তন আসবে এবং আগের মতো নিখুঁতভাবে মেয়াদ বাড়ানোর সুবিধা থাকছে না।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ আগস্ট) প্রকাশিত এক প্রস্তাবিত সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, এটি মার্কিন অভিবাসন ব্যবস্থা আরও কঠোর করার অংশ। বার্তাসংস্থাগুলো জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রশাসন ২০২৪ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্যাপক অভিবাসন দমনসহ বিভিন্ন কঠোরতা চালিয়ে আসছেন। নতুন এই প্রস্তাব কার্যকর হলে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, বিনিময় কর্মী ও সংবাদমাধ্যমকর্মীদের জন্য এক নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। এর ফলে এখন থেকে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে, যা আগে তুলনামূলকভাবে সহজ ছিল।
নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা (এফ ভিসা), সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির জে ভিসা ও সংবাদমাধ্যমকর্মীদের আই ভিসার মেয়াদ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য থাকবে। বর্তমানে এসব ভিসার মেয়াদ কর্মসূচির ধরণ বা চাকরির সময় অনুযায়ী নির্ধারিত হলেও, প্রস্তাব অনুযায়ী মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত থাকবে। তবে সাংবাদিকদের ভিসার মেয়াদ থাকবে কেবল ২৪০ দিন, এবং চীনের নাগরিকদের জন্য মেয়াদ থাকবে মাত্র ৯০ দিন। ভিসাধারীরা এই মেয়াদ শেষে মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই পরিবর্তনের লক্ষ্য হলো ভিসাধারীদের পর্যবেক্ষণ ও তদারকি আরও কার্যকর করা। বার্তাসংস্থাগুলোর মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই ধরনের পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হচ্ছে, তারা আরও দৃঢ়ভাবে দেশের নিরাপত্তা ও আইন মানার দিকে নজর দিচ্ছেন।
এই প্রস্তাবের জন্য জনগণের মতামত গ্রহণের জন্য ৩০ দিনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসন একই ধরনের একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু ২০২১ সালে ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই উদ্যোগ প্রত্যাহার করে নেন।
নাফসা নামক আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিষয়ক অলাভজনক সংগঠন এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল, যাঁরা বিশ্বজুড়ে ৪৫০০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। তারা বলেছে, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা শিক্ষাক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ঝক্কি বাড়াচ্ছে।
রয়টার্সের তথ্যে জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এর আগেও অভিবাসন কঠোর করা নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতবিরোধ এবং নীতিমালা পরিবর্তনের কারণে অনেকের ভিসা ও গ্রিন কার্ড বাতিলের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, সম্প্রতি ইউএসসিআইএস জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা নাগরিকত্ব ও অভিবাসন আবেদনকারীদের আবাসিক এলাকা পরিদর্শন শুরু করবে, যেখানে আবেদনকারীদের বসবাস, চরিত্র ও মূলভিত্তি যাচাই করা হবে।