আশির দশকে ফুটবল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নেপালের বিরুদ্ধে বড় ব্যবধানে জেতার স্মৃতিও থাকলেও সময়ের বিবর্তনে সেই দিনগুলো এলোমেলো হয়ে গেছে। শেষ পাঁচ বছরে বাংলাদেশ নেপালের বিপক্ষে কখনও জয় পায়নি, আর ড্র হয়েছে মাত্র চারবার। ২০২২ সালে সবচেয়ে সাম্প্রতিকবার মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল, সেবার নেপাল জানুয়ারিতে ৩-০ গোলে জয়লাভ করেছিল। কিন্তু আজ নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত ফিফা প্রীতি ম্যাচে জামালরা গোলে না দেখা এক ড্র করে মাঠ ছাড়ে।
প্রত্যাশিত ছিল যে আগামী মাসে অক্টোবরে আয়োজিত এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্য দুই দলই নিজেদের প্রস্তুত করতে এই ফিফা উইন্ডোতে সিরিজ খেলবে। প্রথম ম্যাচে কেউই গোল করতে পারল না, ফলে উভয় দলই এক পয়েন্ট করে ভাগ করে নিয়েছে।
২০২১ সালে মালদ্বীপের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সময় বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ ছিল অঘোষিত সেমিফাইনাল। ঐ ম্যাচে বাংলাদেশ জেতালে ফাইনালে উঠতে পারত, কিন্তু ড্র করার কারণে নেপাল ভারতের সঙ্গে ফাইনাল খেলেছে। ঐ বছরের মার্চে বাংলাদেশ কাঠমান্ডুতে একটি ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট খেলেছিল, যেখানে স্বাগতিক নেপাল ২-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
এরপর ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ রবিন রিগের ম্যাচে বাংলাদেশ গোল শূন্য ড্র করে। এই ড্রয়ের মাধ্যমে তারা চার বছর পর আবার নেপালে ড্র করল। ভিয়েতনামে মোরসালিনরা ইয়েমেনের বিপক্ষে নাটকীয় হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছিল, কিন্তু নেপালে জামালরা ড্র করে অন্তত ফুটবলপ্রেমীদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। তবে, বর্তমানে দেশের বড় স্টেডিয়াম দশরথ এএফসি বৃহৎ টুর্নামেন্টের জন্য পর্যাপ্ত নয় বলে সমালোচনার মুখোমুখি।
অবশ্য এই পরিস্থিতিতে দর্শকদের মাঝে আর আলোচনা চলতে থাকছে শতাব্দীর প্রাচীন দশরথের মাঠের। রোদ-বৃষ্টির মধ্যবর্তী খেলায় মাঠের অবস্থা কিছুটা খারাপ ছিল, যার ফলে খেলোয়াড়রা অনেক সময় মাঠে ব্যাহত হন। দেশের জাতীয় দলের নিয়মিত গোলরক্ষক মিতুল মারমা আজকের ম্যাচে ছিলেন না, তবে সুজন হোসেনের অভিষেক ম্যাচে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় পড়েননি। নেপালীয় দল আক্রমণ করলেও তারা পরিষ্কার ভাবে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি, বাংলাদেশের রক্ষা সহজ ছিল।
ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে রহমত মিয়ার লম্বা থ্রো ইন অফসাইডের কাছাকাছি ছিল, কিন্তু নেপালের গোলরক্ষক কিরণ বল গ্রিপ করতে ব্যর্থ হন। বাংলাদেশি ফরোয়ার্ডরা সুযোগ তৈরি করলেও গোলের দেখা পাননি।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ দল কিছুটা কাঠামো বজায় রেখে বল দখলে বেশি সময় নিয়েছে, পাসেসমূহের পরিকল্পনাও দেখা গেছে। নেপালের ফুটবলাররা দুই বছর ঘরোয়া লিগ খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও, তারা প্রায় দেড় মাসের নিয়মিত প্রস্তুতিতে খেলেছে। অস্ট্রেলিয়ান কোচ ম্যাট রসের অধীনে স্বাগতিক দল ফুটবলে নতুন ভাবনা আনতে চেষ্টা করেছে। পরবর্তী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ৯ সেপ্টেম্বর।