ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী সাদিক কায়েম। তিনি এই বিজয়ের জন্য ব্যক্তিগত অংশগ্রহণ বা দুর্বলতা দেখছেন না; বরং এটি সম্পূর্ণভাবে ‘জুলাই প্রজন্ম’ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সম্মিলিত অর্জন বলে মনে করেন। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
সাদিক কায়েম বলেন, ডাকসু নির্বাচনে কোনো জয় বা পরাজয় বলে কিছু নেই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে মূল বিজয়ী হলো ‘জুলাই প্রজন্ম’ এবং ਸਭ শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে এই জয় হলো সেই সামষ্টিক আকাঙ্ক্ষা, যে বিপ্লবের স্বপ্ন আর শহীদদের আত্মত্যাগের স্বপ্ন আমাদের আজকের প্রেক্ষাপটে বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদদের। জানান, নিত্যদিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও মুক্তির সংগ্রামে জীবনদানকারী সকল শহীদকে তিনি সম্মান ও স্মরণ করেন। বিশেষ করে, শহীদ আবরার ফাহাদের কথা উল্লেখ করে বলেন, যারা ছত্রলীগের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য তিনি দোয়া করেন যেন তারা আল্লাহর নিকট জান্নাতুল ফেরদৌস লাভ করেন।
ভিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের অঙ্গীকার করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে অমূল্য আস্থা আমাদের ওপর দিয়েছেন, আমি সেটার মর্যাদা রাখবো। আমাদের প্যানেলের আরোহী এসএম ফরহাদ, মহিউদ্দিন খানের মতো নেতাদের জন্য আমি দায়িত্বে থাকব। তৎপর থাকব সেই স্বপ্নের ক্যাম্পাস গড়ার জন্য, যেখানে শিক্ষার মান উন্নত হবে, গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হবে, আবাসন ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হবে। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করতেও তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সাদিক কায়েম আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ ভাবনায় আমি চাই এটি একটি আধুনিক, উন্নত ও বহুমুখী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়। এখানে প্রথম বর্ষ থেকে শেষ বর্ষ পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষার্থী উন্নত মানের শিক্ষা ও গবেষণায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে নারীর অবদানও তিনি বিশেষভাবে স্মরণ করেন। বলেন, নারীরা যে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ। জুলাই বিপ্লবের প্রতিটি কাজে তাদের সাহস ও অংশগ্রহণ অনুপ্রেরণা।
সংবাদ সম্মেলনের শেষে তিনি দোয়া ও সমর্থন কামনা করেন। বলেন, এই বিজয় কেবল আনন্দের বিষয় নয়, এটি একটি পরীক্ষা। আমরা সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। নিরাপদ, আধুনিক ও স্বাভাবিক পরিবেশ গড়তে আপনাদের সহযোগিতা ও দোয়া প্রয়োজন।