নেপালে সরকারবিরোধী আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়ার পর দেশের বিভিন্ন অংশে কারফিউ জারি করেছে সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল দেশবাসীর উদ্দেশে এক ভাষণে কঠোর বার্তা প্রদান করে বলেন, আন্দোলনের নামে যদি ভাঙচুর, লুটপাট বা সাধারণ নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ হবে। তিনি এই ভাষণে আরো বলেন, ‘আমরা আন্দোলনকারীদের অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা অবিলম্বে নিজেদের কর্মসূচি স্থগিত করে আলোচনায় বসুক। আমাদের লক্ষ্য এই পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করা, দেশের ঐতিহ্য ও জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা এবং সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’ সেনাপ্রধান সহিংসতার কারণে নিহত ও আহত সকল পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, নেপাল সেনাবাহিনী দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। খবর এনডিটিভির। ৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া সহিংসতায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৯ জন আন্দোলনকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এর ফলে দেশজুড়ে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে এবং আন্দোলন আরও বিস্তার লাভ করেছে। শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে এই আন্দোলন শুরু হলেও দ্রুত তা বৃহত্তর রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলনকারীরা নিজেদের ‘জেন জেড’ বলে পরিচয় দিচ্ছেন, যাদের বেশির ভাগের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে। তারা সরকারের দুর্নীতি, স্বচ্ছতার অভাব, রাজনৈতিক নেতাদের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও সাধারণ মানুষের দুঃখে জীবনের বৈষম্য বিষয়গুলো তুলে ধরছেন। কিছু প্রতিবাদকারী সরকারি ভবন ও রাজনীতিবিদদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘কিছু গোষ্ঠী পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাধারণ নাগরিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের মারাত্মক ক্ষতি করছে।’ বিশ্লেষকদের মতে, সেনাবাহিনীর কঠোর সতর্কতা এবং রাজনীতি অস্থিতিশীলতা নেপালের সামনে নতুন এক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।