চলতি বছরের জুন মাসের শেষে বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ গিয়ে পৌঁছেছে ১১২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক সূচক। এ পরিমাণ ডলার বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ হাজার ২১৬ কোটি ডলার, যেখানে প্রতি ডলার আনুমানিক ১২২ টাকায় হিসাব করা হয়েছে।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, গত সাড়ে ১৫ বছরে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত ঋণ যোগ হয়েছে। এ সময়ে সরকার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে—যেমন আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা এবং এআইআইবিসহ—বেশি পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করে দেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উদ্যোগেরাও বিদেশি উৎস থেকে কম সুদের ঋণ নিতে উৎসাহিত হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বৈদেশিক ঋণের প্রায় ৮২ শতাংশের মালিকানা সরকারি খাতের, আর বেসরকারি খাতে রয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ।
গত মার্চ মাসে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ১০৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ১০ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। এর পরে তিন মাসের ব্যবধানে ঋণের স্তর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ আধা শতক বেশি। ছয় মাসের মধ্যে এই পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৮৪৩ কোটি ডলার। আর ডিসেম্বরের শেষের দিকে দেশে বিদেশি ঋণের স্তর ছিল ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি ডলার।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে বিশাল পরিমাণ বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়, যা দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরেছে। তবে ২০২৪ সাল থেকে ঋণের বিপুল পরিমাণ পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা সরকারের জন্য চাপ তৈরি করে। এর ফলস্বরূপ, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে কিছুটা বাধা সৃষ্টি হয়, কারণ আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি। ফলে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ কমে যায়, যা মূলত ২৪ বিলিয়ন ডলার।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। প্রবাসী আয়ে বৃদ্ধি এসেছে, পাশাপাশি বিদেশি ঋণের প্রবাহ অব্যাহত থাকায় ডলারের বিনিময় হার স্থির থাকছে। শেষ পর্যন্ত, ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি রিজার্ভ আবার ৩১ বিলিয়ন ডলার ছ surpassিয়েছে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক।