বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে টানা উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। বাংলাদেশের মূল কোচ ফিল সিমন্স বলছেন, ভারতের বিরুদ্ধে হার মানা সম্ভব, যদি তারা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারে। তার মতে, যদি টিমটি নিজের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারে, তবে ভারতের বিপক্ষে জেতার সম্ভাবনা একেবারে অস্বীকার করার জায়গা নেই। কোচের এই মন্তব্য স্পষ্ট করে দেয়, সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পাওয়ার পর বাংলাদেশের মনোবল অনেকটাই বেড়ে গেছে এবং তারা এখন আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী। এই জয় মানসিকভাবে তাদেরকে ফুরফুরে মেজাজে রাখতে সহায়তা করেছে, যা তাদের সামনে থাকা ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য অনেকটা অনুপ্রেরণা।
বাংলাদেশ দলের স্বপ্ন এখন একটাই—আরেকটি ফাইনালে খেলা। হংকং এবং আফগানিস্তানকে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপের রানার্স-আপ হিসেবে সুপার ফোরে পৌঁছায় বাংলাদেশ। সেখানে তারা তাদের দুর্দান্ত শুরু করে শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে। এর আগে গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল লিটন দাসের দল। এখনকার পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশরা অপরাজিত থেকে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে, যা আজ (বুধবার) দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে। এই ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও নাগরিক টিভি।
তথ্যবহুল পরিসংখ্যান বলছে, ভারত যদিও বলের পরিসংখ্যান ও শক্তিমত্তায় অনেক এগিয়ে, তবে সম্প্রতি বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স দেখিয়েছে দলটি, যা তাদের মানসিকভাবে উজ্জীবিত করে তুলছে। উইকেট এখন ধীর গতি ধারণের আভাস দেয়ায় বাংলাদেশের সুবিধার সম্ভাবনাও বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে, ভারতকে হারানোর সম্ভাবনা বাংলাদেশের জন্য বাড়ছে।
অতীতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের রেকর্ড কিছুটা কঠিন হলেও, কোচ ফিল সিমন্স বিশ্বাস করেন, ভারতের হারতে থাকাটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিটি দলেরই ভারতকে হারানোর ক্ষমতা আছে। ভারত আগে কি করেছে, সেটি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এখন এক নতুন ম্যাচ, নতুন সুযোগ। আমরা লক্ষ্য করব, নিজের সর্বোচ্চটা খেলব এবং ভারতের পরিকল্পনাকে ভেস্তে দিয়ে ম্যাচ জিততে মরিয়া থাকব।’
মনে রাখতে হবে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ভারতকে মোট ১৭ বার মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে একবারই জয় পেয়েছে। ২০১৯ সালে ভারতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয় হাসিল করে। তবে মোট ১৫বার ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দেখা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ মাত্র দুইবার জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপের টি-টোয়েন্টি সংস্করণে দুইবারেরই পরাজয় ছিল বাংলাদেশের জন্য।
নির্ধারিত ম্যাচের আগে, অধিনায়ক লিটন দাস ইনজুরির কারণে খেলতে না পারার শঙ্কা থাকলেও, অনুমিতভাবে তিনি খেলবেন বলে প্রত্যাশা। টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্মে থাকায় তিনি ৪ ইনিংসে ১১৯ রান সংগ্রহ করেছেন।
বাংলাদেশের স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়রা হলেন: লিটন দাস (অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হাসান ইমন, সাইফ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি, শামিম হোসেন, নুরুল হাসান, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
ভারতীয় দলে থাকছেন: সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), শুভমান গিল (সহ-অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, তিলক ভার্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, শিবাম দুবে, অক্ষর প্যাটেল, জিতেশ শর্মা (উইকেটরক্ষক), জসপ্রিত বুমরাহ, আশদীপ সিং, বরুন চক্রবর্তী, কুলদ্বীপ যাদব, সঞ্জু স্যামসন (উইকেটরক্ষক), হার্ষিত রানা, রিংকু সিং।
আজকের ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ একনজরে প্রস্তুত, আত্মবিশ্বাসী ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে মাঠে নামার জন্য। এই ম্যাচটি শুধু একটি পরিসংখ্যানের লড়াই নয়, বরং বাংলাদেশের সামনে অর্থবহ এক সম্ভাবনাময় মুহূর্ত।