ভারতের লাদাখে রাজ্য মর্যাদা ও সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিকে কেন্দ্র করে চলমান আন্দোলন সহিংস রূপ ধারণ করেছে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) লেহ শহরে ব্যাপক বিক্ষোভে অন্তত চারজন নিহত এবং ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিকেল ৪টার পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। লাদাখের দাবির ওপর সরকারের সঙ্গে আলোচনা চললেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, লেহ অ্যাপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের সঙ্গে আলোচনা বেশ অগ্রগতি হয়েছে। তবে কিছু রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ব্যক্তি এই অগ্রগতি নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছেন। মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক জনগণকে উসকানোর জন্য নেপালের ‘জেন-জি’ আন্দোলন ও আরব বসন্তের উদাহরণ টেনে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
সহিংসতার ঘটনায় দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা বিজেপি কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলের সদর দফতরে পাথর নিক্ষেপ করে। পরে তারা একটি নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি এবং আরও কয়েকটি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেন। বিজেপির কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। এতে অন্তত ৩০ জন পুলিশ ও সিআরপিএফ সদস্য আহত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালাতে হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি—লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা প্রদান এবং ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তি। এই দাবির জন্য লেহ অ্যাপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স গত চার বছর ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসেছে। অন্যদিকে, অনশনরত জলবায়ু কর্মী সোনম ওয়াংচুক তাদের ১৫ দিনের অনশন প্রত্যাহার করে শান্তির আবেদন জানিয়েছেন।
সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো—ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম এবং আসামের উপজাতি জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রদান করে। এর আওতায় স্বায়ত্তশাসিত পরিষদ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা, স্থানীয় সংস্থার ভূমিকা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়। আগামী ৬ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লেহ অ্যাপেক্স বডি ও কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের মধ্যে পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
আজকের খবর / এমকে