বিএনপি আবারও স্পষ্টভাবে নিজেদের موقف জানিয়েছে যে তারা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে চায় না। সম্প্রতি নিউইয়র্কে অবস্থিত ঠিকানা পত্রিকার সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই বিষয়টি আলোর মুখ দেখান। তিনি বলেন, আমরা কখনোই চাই না কোনো দলকে নিষিদ্ধ করা হোক। বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল, যারা চায় সকলের মত প্রকাশ ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা রক্ষা করতে।
তিনি আরও বলেন, তবে যদি কোনও দল গণহত্যা বা দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের জন্য সরাসরি জড়িত হয়, তখন তাদের শাস্তি পেতেই হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিশাল ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি স্পষ্ট করেছেন, বিএনপি নয়, বরং কর্তৃত্বের সাথে বলছে, রাজনীতিতে দল banning করার পক্ষপাতী নয় তারা। তবে, গণহত্যা বা অন্য কোনও গুরুতর অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে, তাদের বিচার অবশ্যই হবে।
নির্বাচনের সময় দিক দিয়ে জনগণের মধ্যে যে অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে, সেটাও তিনি স্বীকার করেন। তিনি জানান, চলতি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এই অবিশ্বাস দূর করতে সকলকেই দায়িত্বশীল হিসেবে কাজ করতে হবে এবং দেশের মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য একসাথে এগিয়ে আসতে হবে।
নেতারা একত্রে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন, বিশেষ করে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক দিকে এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাঁর মতে, সব রাজনৈতিক দলই জানে যে, নির্বাচন হবে এবং এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে, দেশের বিভিন্ন জটিলতাকে কাটিয়ে উঠতে রাজনৈতিক দল, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগসাজশ অব্যাহত রাখতে হবে।
ফখরুল জানান, আওয়ামী লীগ সম্প্রতি বিভাজনের রাজনীতি সৃষ্টি করেছে। এই বিভাজনের ফলে সাধারণ জনগণ, মিডিয়া এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস জন্ম নিয়েছে, যা দ্রুত দূর করতে হবে। এজন্য সব দলের মধ্যে যোগাযোগ এবং বিশ্বাসের পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।
আরও, রাজনৈতিক দলগুলোর একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বার্গেইন বা মতানৈক্য আছে বলেও তিনি স্বীকার করেন। এই ধরনের আলোচনা ও সমঝোতা প্রশংসনীয় ও স্বাভাবিক। বিএনপি মহাসচিব বলেন, নেতাদের সঙ্গে মতানৈক্য থাকা সত্ত্বেও দলগুলো মোটামুটি এগোচ্ছে এবং আলোচনা চালিয়ে যাওয়া উচিত।
একই সঙ্গে, তিনি উল্লেখ করেন যে, ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ব্যক্তিগত কোনও আলোচনা হয়নি। তবে, তাদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের দল ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা সব সময় দেশের স্বার্থে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, রাজনীতিতে সম্পর্কের তারতম্য থাকতেই পারে, তবে বিএনপির সম্পর্ক এখনো খারাপ হয়নি। সব দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হয় এবং সেগুলোর স্বাভাবিক ধারায় এগিয়ে যাওয়া দরকার।
আন্তর্জাতিক বিষয়েও তিনি মন্তব্য করেন যে, মিডিয়ার মাধ্যমে কোনও ব্যক্তিকে ক্ষতিসাধনের পরিকল্পনা করা না হলেও, সাক্ষাৎকারে কোনও ভুল বোঝাবুঝি বা অপপ্রচার হলে তার জন্য সেটাই দায়ী। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, সরকার বা অন্য এক জনের জন্য এই সময়ে কোনও ধরনের অপপ্রচার সম্পূর্ণ অবান্তর।
পরিশেষে, তিনি বলেন যে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আরেক নেতা তারেক রহমান শীঘ্রই ফিরবেন, যত দ্রুত সমস্ত আইনি ও রাজনৈতিক সমস্যা শেষ হবে। তিনি বলেন, তারেক রহমান একজন জাতীয় নেতা, যার নিরাপত্তা ও সম্মান সব সময় আমাদের দায়িত্ব। যখন সঠিক সময় হবে, তখন তিনি দেশের জন্য ফিরবেন।