জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে দেশের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিত্বরা মিলিত হন। তারা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য তাদের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের একটি হোটেল স্যুইটে এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে নেতৃত্ব দেন লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ভায়রা ভিকে-ফ্রেইবার্গার, যিনি এনজিওসিরি নিজামী গঞ্জভির নামে প্রতিষ্ঠিত নিজামী গঞ্জভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের সহ-সভাপতি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় প্রতিনিধি, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েক ডজন আন্তর্জাতিক নেতা।
উপস্থিত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ এর দিকে গভীর মনোযোগ দেন। তারা দেশটির দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা স্বীকার করেন, তবে একমত হন যে দ্রুত এক অন্তর্বর্তী সরকার গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার জরুরি। কেরি কেনেডি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। তাদের জন্য আমাদের সমর্থন অপরিহার্য।’
এ সময় জর্জটাউন ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মেলানি ভেরভি জানান, শিগগিরই এই সংস্থা বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতির পাশে দাঁড়াতে পরিকল্পনা করছে। এছাড়াও, ইসমাইল সেরাগেলদিন, রবার্ট এফ. কেনেডি, ও আইএইএর প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূস এই সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য অবিশ্বাস্য আবেগের, আপনাদের সমর্থন পেয়ে আমি অত্যন্ত অভিভূত।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা অনেক ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে, যা আমি ভূমিকম্পের সঙ্গে তুলনা করি। এখন জনগণ দ্রুত পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি জানান, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে সবার সহযোগিতা, দিকনির্দেশনা ও নৈতিক সমর্থন প্রয়োজন। আমাদের লক্ষ্য যেন তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণ হয়।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মরশেদও, যারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন চেয়েছিলেন। এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রতি দৃষ্টিপাত করে দেশের উন্নয়নের জন্য তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।