প্রিয় দেশবাসী, ট্রেড পার্টনার্স ও কনসার্ন কর্তৃপক্ষ, আপনি সকলকে সতর্ক করে বলতে চাই যে, ঢাকার অতি পরিচিত পর্যটন কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান আকাশবাড়ি হলিডেজের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের মূল বিষয় হলো সেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলছে বড় ধরনের অবৈধ কার্যক্রম, প্রতারণা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি।
এই প্রতিষ্ঠানটির চারজন কর্মী, যথাক্রমে ইমতিয়াজ, আবু বকর রাব্বি, তৌহিদুল ইসলাম মাসুম ও তাজরীন আকতার, সবাই এককালীন বহু বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করে আসছিলেন। ফাঁদে ফেলে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন ও সুবিধাদি গ্রহণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে কারো কাছে কোটি টাকার গাড়িও রয়েছে। এর পাশাপাশি মোর্শেদ জুয়েল, যিনি ‘ফাস্ট ট্রিপ’ নামে একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, তিনি এবং তাঁর চার সহকর্মী বিভিন্ন ধরণের মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে এক সাথে কাজ করেছেন। গত ২৭ আগস্ট তারা তিনজন রিজাইন লেটার জমা দিয়ে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের চেষ্টাও করেছেন, তবে এতকিছুর পরও কেউ এখনো তাদের অনুমোদন দেয়নি। গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানা গেছে, তারা অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে জাল ছাড়পত্র তৈরি করে ইমোশনাল প্ররোচনায় কোম্পানি থেকে জুনিয়র কর্মচারীদের প্রলুব্ধ করে তুলেছেন।
উল্লেখ্য, তারা তাদের নিজেদের কোম্পানি ‘টি কোম্পানি’ নামে নতুন করে সৃষ্টি করে সফটওয়্যার লঞ্চ করে ব্যবসা চালাচ্ছে। তারা আকাশবাড়ির গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, ডেটাবেস, কাস্টমার ডেটা, পাসপোর্টের কপি, হার্ড ডিস্কসহ অন্যান্য সংবেদনশীল নথিপত্র অবৈধভাবে নিজেরাই ব্যবহার করে আসছিলেন। আমি আবিষ্কার করেছি কমপক্ষে একশোটির অধিক প্রমাণের অস্তিত্ব, যার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠছে অভিযোগের সত্যতা। আমার আদৌ অনেক কাস্টমার প্ররোচনায় আমাকে চাকরি থেকে সরিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানাতে চাই, আমি কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতিতে পতিত হয়েছি। আকাশবাড়ি হলিডেজের মোট আয় ও কর পরিশোধের হিসাব-নিকাসের তথ্য খুবই উদ্বেগজনক। এই প্রতিষ্ঠান বছরে অন্তত দেড় থেকে দুই কোটি ডলার বিদেশি রেমিটেন্স আয় করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন উঠে আসে— এই কেমন বাংলাদেশ, যেখানে কেউ চাকরি করেও প্রতারণা চালাতে পারে, কাস্টমার ও ডেটা হাতিয়ে নিতে পারে, এবং কোম্পানির অনুমোদন না থাকলেও অপ্রত্যাশিতভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে থাকে? এভাবে তারা আইন, নীতি বা সংস্থার নিয়ম মেনে চলেনি। গত ছয় মাস ধরে এই সব ব্যক্তিরা একযোগে নতুন কোম্পানি খুলে, বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্লায়েন্ট ও ডেটা চুরি করে চলেছেন। এরকম অবৈধ কার্যক্রম চালাতে তাদের পিছনে কারা ইন্ধন দিচ্ছে? অবৈধ এই কার্যক্রমের পিছনে কোন শক্তিশালী প্রভাবশালী মহল আছেন কি? এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজে পাওয়া এখনও একান্ত প্রয়োজন।
অভিযোগে আরো জানা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো হাজারো পাসপোর্ট অফিসে অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছে, সরকারের অনুমোদন উপেক্ষা করে। প্রলোভন দেখিয়ে কমপক্ষে ৩০ জন কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের এই চক্রের সাথে যোগ দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে মনীষা আখতার, খলিল, মিজানসহ আরও অনেকে ইতোমধ্যে এই অনৈতিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত। মনীষা আখতার তার নিজস্ব অফিসে গোপনে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ও হার্ডওয়্যার নষ্ট করে ফেলেছেন, যা সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আমি দৃঢ়ভাবে বলছি, এই পাঁচজন প্রতারকের শাস্তির জন্য আমি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সহায়ক কর্তৃপক্ষ, ট্রেড পার্টনার, কাস্টমার ও সকল ভুক্তভোগীর সাহায্য চাই। যদি তারা নিজেদের দায়িত্ব ও নীতিমালা অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নিতে না পারেন, তবে আমি আগামী তিন মাসের মধ্যে মোট ১৯০ জন কর্মচারী এবং তাদের পরিবারকে চিন্তা না করে কোম্পানি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব। কারণ, ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রির মূল সম্পদ হলো সুনাম, ডেটাবেস, যোগ্য কর্মী ও কাজের পরিবেশ। এই সমস্ত সম্পদ আমার অবৈধভাবে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমি সরকারি উচ্চ পর্যায়ে বার বার অভিযোগ জানিয়েও এখনো কোনো বিচার পাইনি। আমার কোম্পানিতে কোটি কোটি টাকা অপ্রদর্শিত পেআউট হচ্ছে, যার প্রবাহ ও মানদণ্ড নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এর প্রভাব অনেক কর্মচারী ও তাদের পরিবারের উপর পড়ছে, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
অন্তিমে আমি উপস্থিত আকারে প্রতিদিন অফিসে থাকবো, সবাইকে প্রমাণ দেখে যাওয়ার আহ্বান জানাই। এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানাতে চাই, যারা এই শিল্পে চাকরি করেন, তাদের জন্য শোভনকার্য ও সততার পথে চলার সুযোগ রয়েছে। তবে যারা বেআইনি পথে হাঁটছেন, তারা শুধু দেখতে যান।
লেখক: তৌহিদুল আলম মিল্কী
আজকের খবর/ওআর