লন্ডনের এনফিল্ড কাউন্সিলের সাবেক মেয়র ও লেবার পার্টির উল্লেখযোগ্য নেতা মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম তার পদে থাকা অবস্থায় জালিয়াতি করে বাংলাদেশের স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের ভিসা সহজে পেতে চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ-এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তিনি সাবেক কাউন্সিলর হিসেবে সরকারি ক্রেস্ট ও লোগোযুক্ত লেটারহেড ব্যবহার করে ‘অধিকারিক’ ও ‘জালিয়াতিপূর্ণ’ চিঠি পাঠানোর কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। এই চিঠিগুলো ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনে পাঠিয়ে ৪১ জনের ভিসার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়। তদন্তের মাধ্যমে জানা গেছে, বেশ কিছু চিঠি তার মেয়র হওয়ার আগে পাঠানো হয়, আর কাউন্সিলের কর্মকর্তারা ভিসা সংক্রান্ত চিঠি প্রস্তুত করতে অস্বস্তি প্রকাশ করলে নিজেই এগুলো জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি ও পাঠান। ১৩টি চিঠি মেয়র পদের قبل পাঠানো হয়, যেখানে তিনি ছয়টি নিজে পাঠিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন, ও বাকি ১১টির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা আছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এসব ব্যক্তির উপস্থিতি তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তাদের খরচ বহনের আশ্বাসও দেয়া হয়। তবে, শুধু একজনই অনুষ্ঠানটিতে অংশ নিতে পেরেছেন। এনফিল্ড কাউন্সিলের তদন্তে প্রকাশ পায়, আমিরুল ইসলাম অসততা প্রদর্শন করেছেন এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে পদ ব্যবহার করে কাউন্সিলের নামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। তার আচরণে নিয়মিততার ধারা দেখা গেছে বলে বিশ্লেষণে উল্লেখ হয়। নিজের পক্ষে তিনি দাবি করেন যে, আগের মেয়ররাও এমন ভিসা সুপারিশ করেছেন এবং একটি ‘এজেন্সি’ তার স্বাক্ষর জাল করে কিছু চিঠি পাঠিয়েছে। তিনি আরও বলেন, তার সুপারিশকৃত কোনো ভিসা শেষ পর্যন্ত অনুমোদিত হয়নি। একে কেন্দ্র করে ২০২৫ সালের জুনে লেবার পার্টি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে, তবে তিনি বর্তমানে স্বতন্ত্র কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কাউন্সিল তাকে আচরণবিধি মেনে চলা, প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং ভবিষ্যতে ভিসা সংক্রান্ত কাজে পদ্বব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি, তাকে সাবেক মেয়রের ব্যাজ ব্যবহার না করতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টির বিরোধীদলীয় নেতার জর্জিও আলেসান্দ্রো বলেন, ‘লেবার কাউন্সিল এই বিষয়গুলো আগেই জেনেও তাকে মেয়র পদে রাখে, যা পুরো কাউন্সিলের মানহানি। তার পদত্যাগই উচিত।’ ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তদন্ত চলমান থাকায় তারা এখনই কোনো মন্তব্য করবে না, তবে সব ধরনের অভিবাসন সংক্রান্ত অপরাধ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।