বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে জামায়াত ও শিবিরের লোকজনকে বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, খুঁজে খুঁজে ইসলামী ছাত্রশিবির তথা জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা দেশের সামগ্রিক প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য উদ্বেগজনক।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এই মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক তথা ফ্যাসিস্ট দলে যারা বিজেপিবিরোধী ও ইসলামপন্থি, এমন ব্যক্তিদের প্রশাসনিক অঙ্গনে স্থান দেওয়া হচ্ছে। এতে করে যে কোন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হবে না বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, কিছু কর্মকর্তা যেন বিএনপি ও বিএনপি পরিবার থেকে উঠে আসা নেতাকর্মীদের দূরে রাখার চেষ্টা করছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারাও সেই কাজ করে আসছেন, বিশেষ করে গুম, গুঞ্জন ও মিথ্যা মামলাজড়ানোর মাধ্যমে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিতাড়িত করতে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই এমন অনেক কর্মকর্তাকে প্রশাসনের নানা পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বা অবহেলায রেখেছে।
তিনি বলেন, “অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা যথেষ্ট সচেতন। তবে প্রশাসনে পারদর্শী ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিবর্গের সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য বিপজ্জনক।”
রিজভী অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক নিয়োগকৃত বেশ কিছু কর্মকর্তার যোগ্যতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি বলেন, প্রাথমিক যোগ্যতার ভিত্তিতে যোগদানকারী অনেকেই আদৌ বিএনপি বা জামায়াত পরিবারের না, কিন্তু তাদেরকে দলীয় কাজে ব্যবহার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তিনি বলVoc আরো বলেন, “আমরা চাই প্রশাসনে সেইসব ব্যক্তিদের থাকুক যারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। যারা একাধিকবার সরকারি পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে জনগণের সেবা করবেন, তাদের সরাসরি যোগ্যতা ও সততার ভিত্তিতে স্থান দিতে হবে।”
রিজভী বলেন, “বিএনপি সরকার একালে পরীক্ষার সময় কোন দুর্নীতি বা দলীয়তা ছিল না। বরং, ১৯৭২-৭৫ সালেও প্রশাসন দলীয়করণ হয়নি, তবে ১৬/১৭ বছর ধরে এটি ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে, যা এখন দৃশ্যমান। সাংবাদিকরাও দেখেছেন, কিভাবে দলীয় কর্মকর্তারা বিএনপি নেতাদের উপর দমন-পীড়ন চালিয়েছেন।”
সেই সাথে তিনি পাহাড়ি অঞ্চল ও গার্মেন্ট শিল্পে কিছু অস্থিতিশীল পরিস্থিতি লক্ষ্য করেছেন, যা মহামারির মত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তাঁর ভাষ্য, এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; অশান্তির পেছনে কোনো চক্র জড়িত থাকতে পারে। তিনি দেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব অশুভ শক্তির মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সংক্ষেপে, রিজভী প্রশাসনে জামায়াত-শিবিরের অনুপ্রবেশের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এর মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হুমকির মুখে পড়ছে, সেটি রুখে দিতে সবার উচিত ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ প্রশাসনের জন্য কাজ করা।