দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ ও পানির গুরুতর সংকটের কারণে দেশজুড়ে তরুণরা বিক্ষোভ শুরু করে। এই বিক্ষোভের মুখে পরিস্থিতি দ্রুত আরও অবনতি হতে থাকে, অবশেষে মাদাগাস্কার প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে রাজোয়েলিনা সরকারের পতনের ঘোষণা দেন। তিনি সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে দেশের টেলিভিশনে জাতির নাম করে এক ভাষণে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশের অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য তিনি পুরোপুরি দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। তিনি আরও জানান, আগামী তিন দিনের মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনয়নের জন্য প্রার্থীদের আবেদন আহ্বান করা হবে, এবং শিগগিরই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। এর আগে, বিদ্যুৎ ও পানি সংকটে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ার পর ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানী তারানানারিভোতে তরুণরা ‘জেন-জি’ ব্যানারে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলন দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং সরকার বিরোধী বড় ধরনের বিক্ষোভে রূপান্তরিত হয়। ওই বিক্ষোভে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হন এবং শতাধিক মানুষ আহত হন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠতে থাকে, তখন সরকার প্রথমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রীর পদত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু আন্দোলন আরও জোরদার হয়, বরং বিক্ষোভকারীরা সরাসরি প্রেসিডেন্ট এবং তার সরকারের পদত্যাগের দাবি জানাতে শুরু করেন। শেষমেষ, প্রেসিডেন্ট বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি পুরো সরকারকে বাতিল ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে মাদাগাস্কার নানা ধরনের বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে ২০০৯ সালের গণবিক্ষোভ ছিল গুরুত্বপূর্ণ, যা বিদায় ঘোষণা করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানা। এরপর ওই স্থানে আসেন রাজোয়েলিনা। ২০২৩ সালে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় ফিরে আসার পর এই সংকট দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের সরকারের প্রতি ক্ষোভ যখন ব্যাপক ছিল, তখন এই আন্দোলনের মাধ্যমে তা আরও প্রকাশ পায়। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি।