আজ ভোর থেকেই ঢাকায় প্রবল বৃষ্টি হয়, যা পুরো দিন জুড়ে থেমে থেমে চলছিল। এই বৃষ্টির কারণে শহরের বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে পানি জমতে শুরু করেছে, ফলে বিভিন্ন বাজারে সরবরাহে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে সবজির দামে, যার ফলে ঢাকা শহরের কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে শাক-সবজির দাম স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে।
দাম বৃদ্ধির প্রভাব ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় তারা অধিক দামে সবজি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে, ক্রেতারা অভিযোগ করেন, যেকোনো দুর্যোগ বা বৃষ্টির সময় অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়িয়ে দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। তারা মনে করেন, বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে সবজির দাম একযোগে বাড়িয়ে দেয়, যা সাধারণ ক্রেতাদের জন্য কষ্টকর।
গত দুই দিন ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজারে সবজির দাম ছিল খুবই সহনীয়। যেমন, পটল, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙার দাম প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা, বেগুন, বরবটি, চিচিঙার দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। জালি কুমড়া ও লাউ বিক্রি হচ্ছিলো ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
কিন্তু আজ বুধবার (১ অক্টোবর), বৃষ্টির কারণে বাজারে দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। এখন বরবটিসহ বেশ কিছু সবজির দাম উঠেছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। যেমন, বরবটি বিক্রির মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা, উস্তা ১০০ টাকা, ধন্দুল ও ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এছাড়া কাকরোল ৮০ টাকা, কচুরমুখি ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে, আলু আগে মতোই ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ রেললাইন সংলগ্ন কাঁচাবাজারের বিক্রেতা আশরাফ আলী বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় তারা বেশি দামে কিনে বিক্রি করেন। তিনি বলেছিলেন, সরবরাহের অভাব ও বৃষ্টির কারণেই দাম বেড়ে গেছে, তবে আবার যদি আবহাওয়া ঠিক হয়, দাম আবার স্বাভাবিকে ফিরে আসবে।
অন্যদিকে, মগবাজারের বনলতা মার্কেটের ক্রেতা উম্মে হাবিবা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেকোনো দুর্যোগ বা বৃষ্টির সময় অবৈধ সিন্ডিকেট করে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, গতকাল বিকেল থেকেই বৃষ্টি শুরু হলেও তার আগেই বাজারে মালামাল পৌঁছে গেছে। তখন দাম বাড়ানোর কারণ নেই।
অন্যদিকে, মধুবাগ বাজারের খুচরা বিক্রেতা শামীম জানান, যেখানে দাম বেশি দেখা যাচ্ছে, সেটা মূলত আমদানিকৃত মরিচের কারণে। এই মরিচগুলো সাধারণত ভারত থেকে আনা হয়। তবে, এখন দুর্গাপূজার সময়ে এলসি বন্ধ থাকায় নতুন মরিচ আসছে না, যার কারণে দাম আরও বেড়ে গেছে।
এভাবেই, আবহাওয়া, আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি ও সরবরাহের সকল জটিলতার জন্য সাধারণ ক্রেতাদের জন্য সবজির দাম বৃদ্ধি সত্যিই একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বলছেন ব্যবসায়ীরা।