মরক্কোতে চলমান জেন জি আন্দোলন পরিষ্কারভাবে দেশের বর্তমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যকে প্রকাশ করছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহতের ঘটনা ঘটেছে, যা দেশটিতে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিক্ষোভকারীরা, কিন্তু আন্দোলনের জেরে পরিস্থিতি এখন সহিংস রূপ নেয়।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে একজন বিক্ষোভকারী পুলিশ স্টেশনে হামলার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে দুইজন আহত হয়ে নিহত হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে এই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা ছুরি, পেট্রোলবোমা ও পাথর নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এই সহিংসতায় সারাদেশে মোট ৪০৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৩ জন সাধারণ নাগরিকসহ ২৬৩ জন নিরাপত্তা কর্মী। এই সংঘর্ষের মাঝে বিক্ষোভকারীরা গাড়িতে আগুন দেয়, দোকানপাট ভাঙচুর করে এবং ব্যাংকের ভবন লুটপাটের মতো তদন্তিত ঘটনা ঘটিয়েছে। এসময় অন্তত ১৪২টি নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি ও ২০টি ব্যক্তিগত গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিক্ষোভের মূল সংগঠক হচ্ছে ‘জেন জি ২১২’, নামের এক যুব গোষ্ঠী যারা অনলাইনে সামাজিক মাধ্যম টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং ডিসকর্ডে সমাবেশের আহ্বান জানায়। তাদের দাবি—দেশে ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বিপুল বিনিয়োগ হলেও স্কুল ও হাসপাতালগুলোতে অবহেলা চলছে। তারা স্লোগান দেয়, “স্টেডিয়াম আছে, হাসপাতাল কোথায়?” উল্লেখ্য, তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করলেও পরিস্থিতি এখন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে।
বর্তমানে, যদিও মরক্কো দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি করছে, তবে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে বৈষম্য বাড়ছে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। এই পরিস্থিতির মধ্যেই দেশটি আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের আয়োজন করছে ও ২০২৬ সালের সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক, যা দেশটির গভীর সামাজিক বৈষম্যের দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা
আজকালের খবর/ এমকে