বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের বলিং পারফরম্যান্স দেখে পাকিস্তানি ব্যাটাররা দারুণ চাপে পড়ে যান। নাহিদা আক্তার ও রাবেয়া খান তার ঘূর্ণি বলের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। তারা দেড়শ রানও করতে সক্ষম হননি। বাংলাদেশের বোলাররা তাদের শক্তির দৃঢ় ভিত্তিতে আটকে রেখে পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণে রাখেন। বিশেষ করে রুবাইয়া হায়দার ঝিলিকের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ জয় লাভ করে। তরুণ এই ওপেনার দুর্দান্ত ফিফটিতে ১১৩ বল মোকাবেলা করে অপরাজিত থাকেন, এবং ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে বাংলাদেশ এই ম্যাচ জয় করে নেয়। কলম্বোতে টস জিতে ব্যাটিং শুরু করে পাকিস্তান, কিন্তু ৩৮ ওভার ৩ বলের মধ্যে সব ১০ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রান করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন রামিন শামিম। জবাবে বাংলাদেশ শক্তিশালী ব্যাটিং এ ছাতার মতো দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য নির্ধারণ করে ২ উইকেটের বিনিময়ে ২১১ রান। তাদের জন্য শুরুটা খুব একটা সুখকর হয়নি। উদ্বোধনী জুটিতে ফারজানা হক ১৭ বল খেলেও কেবল ২ রান করেন এবং বিদায় নেন। এরপর তিনে নেমে ব্যর্থ শারমিন আক্তার ১০ রান করে আউট হন। ৩৫ রানে ২ উইকেট পড়ে গেলে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি এসে চাপ সামাল দেন। ঝিলিকের সঙ্গে জোট বেঁধে তিনি ৬২ রান যোগ করেন। জ্যোতি ২৩ রান করে আউট হলে ঝিলিকের জন্য কাজ সহজ হয়ে যায়। তিনি নিজেকে প্রমাণ করে ফেলেন, ওয়ানডে অভিষেকেই ফিফটি করে। ৭৭ বলে ৫৪ রান করেছেন তিনি অপরাজিত. পাশাপাশি মুস্তারিও ১৯ বলের মধ্যে ২৪ রান করেন। বাংলাদেশের হঠাৎ দারুণ শুরু করেন মারুফা, যিনি প্রথম ওভার থেকে পাকিস্তানি ব্যাটারদের অস্থির করে দেন। সুইং ও গতিতে তিনি দারুণ কার্যকরী ছিলেন, প্রথম ওভারেই ডাবল স্ট্রাইক করেন। পাঁচ নম্বর বলে ওমাইমা সোহেলকে বোল্ড করেন, এরপর সিধরা আমিনের স্টাম্প ভেঙে দেন। পাকিস্তানের ব্যাটাররা দ্রুত ফিরে যান। ২ রানে ২ উইকেট পড়ে গেলে মুনিবা আলি ও রামিন শামিম চেষ্টা করেন দলকে ফিরিয়ে আনতে। তবে নাহিদা আক্তার এই জুটি ভাঙেন, ১৭ রান করে সাজঘরে ফিরে যান মুনিবা। শামিমের ৩৯ বলে ২৩ রানও শেষ হয় নাহিদার ক্যাচে। এর আগে দলের ৫ উইকেট পতনের আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে পাকিস্তান। সিধরা নাওয়াজ ২০ বলে ১৫ রান করে লেগ বিফোরে পড়ে যান। এরপর ফাতিমা সানা ও নাটালিয়া পারভেজ চেষ্টা চালালেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ফাতিমা ৩৩ বলে ২২ রান করেন। শেষদিকে ডায়ানা ২২ বলে ১৬ রান করে দলের স্কোর বড় করতে পারেননি। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বলিংয়ের সেরা ছিলেন স্বর্ণা। তার সঙ্গে মারুফা ও নাহিদা দুইটি করে উইকেট পান। নিশিতা নিশি, রাবেয়া খান ও ফাহিমা খাতুন এক-একটি করে উইকেট লাভ করেন। এটি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের জন্য এক বিশাল ভাল সূচনার অনুভূতি, যা ভবিষ্যতের জন্য আশা জাগাচ্ছে।