আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আরও দশ দিন বাকি থাকতেই সুনামগঞ্জ-৩ জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের নাটকীয়তা ও জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এই আসনে চারজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ইতোমধ্যেই নিজেদের পক্ষে ব্যাপক সমর্থন গড়ে তুলতে মাঠে নেমেছেন। বিএনপির এই চার মনোনয়ন প্রত্যাশীর মধ্যে রয়েছেন, যাদের দাবি তারা যথাযথ যোগ্যতা এবং উচ্চশিক্ষিত প্রার্থী, আর তারা বলছেন—অযোগ্য প্রার্থীকে মনোনীত করলে নির্বাচনে ভরাডুবি নিশ্চিত।
এই পরিস্থিতিতে, গত শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকালে জগন্নাথপুর পৌর শহরের আব্দুস সামাদ আজাদ অডিটোরিয়ামে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে থেকে এক জনকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ আহবান জানানো হয়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক এম এ কয়েস। সেখানে অংশ নেন জেলা বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সহসভাপতি ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন ও মেজর (অব.) সৈয়দ আলী আশফাক সুমি।
অতীতের ধারাবাহিক রাজনৈতিক তৎপরতার মধ্যে, এই চারজনই এগিয়ে আছেন তাদের নিজেস্ব অবস্থানে। কেউ যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদের ঘনিষ্ঠ, কেউ আবার অন্যদলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে রয়েছেন। তবে, সবের সমন্বয় হলো—তারা সবাই যোগ্য ও উচ্চশিক্ষিত প্রার্থী, যারা ভুল হলে আসরে বিএনপির ভরাডুবি অনিবার্য। এ কারণেই আলোচনা হচ্ছে, নির্বাচনি মনোনয়ন যদি এই চারজনের মধ্যে কোন একজনকেই দেয়া হয়, তাহলে দলটির জন্য লাভজনক হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে একসঙ্গে উঠে বক্তারা বলছেন, ‘নাদের ভাই—আনোয়ার ভাই ধানের শীষে ভোট চাই, শামী ভাই—কাহার ভাই ধানের শীষে ভোট চাই’। সেখানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাদের স্বপক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন ও ভবিষ্যতের জন্য দলীয় ঐক্য ও শক্তিশালী প্রার্থী নির্বাচনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত বছর জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এই আসনে বিএনপি মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। কয়ছর এম আহমেদ, যিনি দীর্ঘ দিন জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন, সম্প্রতি নিজের প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ সভাপতি এম এ মালেক খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সভাপতি এম এ সাত্তার ও সুরিন্দরদের সাথে আরেকজনের তৎপরতা চলমান রয়েছে। এই অবস্থায়, দুই গ্রুপের মাঝে সাংগঠনিক বিভক্তির কারণে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে পড়েছে, যেখানে একপক্ষ শক্তিশালী হয়ে উঠছে যুক্তরাজ্য বিএনপির অনুসারীদের দ্বারা। এ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মী ও দলীয় স্তরের আলোচনা অব্যাহত।