কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা বর্তমানে অপহরণ ও সন্ত্রাসীদের দৌরত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি র্যাব-১৫ দেশের শীর্ষ ডাকাত ও অপহরণ চক্রের মূলহোতা নুরুল ইসলাম মুন্না (৪০) কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। মুন্না টেকনাফের দক্ষিণ লেংগুরবিল মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা। শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ১টার দিকে টেকনাফের নতুন পল্লান পাড়া এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান চালান র্যাবের দল, যেখানে তাকে আটক করা হয়। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান, এবং অভিযানে উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ ক্যাম্পের সিনিয়র স্কোয়াড লিডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল।
র্যাবের সূত্রে জানা গেছে, মুন্না দীর্ঘদিন ধরে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র পরিচালনা করছিল। এই চক্রটি নিয়মিত মানুষ অপহরণ করে পাহাড়ি অঞ্চলে বন্দি রাখত এবং মুক্তিপণের জন্য অমানবিকভাবে নির্যাতন চালাত। তার বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক, অপহরণ ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার পর তাকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, চলতি বছরের ২৯ আগস্ট রাঙামাটির জোড়াইছড়ি থানার বাসিন্দা সুজন চাকমাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করে চক্রটি। পরে, ৩১শে আগস্ট, ৬ লাখ টাকার মুক্তিপণ না পাওয়ায় তাকে চুরিকাঘাত করে আহত অবস্থায় ফেলে দেয় পাহাড়ের ঢালে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনার সঙ্গে মুন্নার সন্নিবেশ রয়েছে বলে ধারণা করছে র্যাব। তাদের অনুসারে, মুন্নার নেতৃত্বে থাকা সিন্ডিকেটের তিনজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রায় এক বছর আগে, ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর, টেকনাফের মাঠপাড়া এলাকায় দিনদুপুরে দুটি মাছ ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনা ঘটে যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এছাড়াও, গত বছরই নানা অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নাম উঠে আসে।
উল্লেখ্য, সত্ত্বেও মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হলেও একই দিনে আরও সাতজন অপহরণ করে চক্রটি পাহাড়ে নিয়ে গেছে। বর্তমানে এই চক্রটি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে অপহরণ ও অন্য নানা অপারেশনে লিপ्त থাকলেও, তাদের নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অপহরণ বন্ধ হবে না বলে বিভিন্ন সূত্রের দাবি। এর ফলে, অপহরণের এই ফেরিওয়ালারা এখনো আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছে এলাকায়।
আজকের খবর / এমকে