গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্র্যাক্সের উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর মোছা. আজেনা বেগম (৪৫) নামের এক নারী মারা গেছেন। রোববার (৫ অক্টোবর) সকালে বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শুক্রবার রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী মারা যান।
আজেনা বেগম বেলকা ইউনিয়নের পশ্চিম বেলকা গ্রামের মো. আবুল হোসেনের স্ত্রী। চেয়ারম্যান আরও বলেন, আজেনা বেগমের দুটি গরু ও তিনটি ছাগল ছিল, যার মধ্যে এক ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেটি ৩০ সেপ্টেম্বর জবাই করার সময় তার হাতের আঙুলে হাড় লেগে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এরপর তিনি স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসা কাজ না করায় পরিবারের সদস্যরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে।
আজেনা বেগমের ভাতিজা ও একজন পল্লী চিকিৎসক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, প্রথমবার যখন তিনি আমার কাছে এসেছিলেন, তখন তার হাতের এক আঙুলে কালো ফোস্কা দেখা গিয়েছিল। তখনই চিকিৎসা দিয়েছিলাম। কিছু দিন পরে আবার হাসপাতালে এসেছিলেন, তখন দেখেছিলাম সেই ফোসকা আর নেই, কিন্তু লালচে হয়ে আছে। তখনই মনে হয়েছিল আঙুলে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু থাকতে পারে, এবং দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক বলেন, ৪ অক্টোবর হাসপাতালে আসার পর তাদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, রোগীর শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে তাকে রংপুর মেডিকেল রেফার করা হয়।
অ্যানথ্র্যাক্সে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরীক্ষা প্রয়োজন হলেও, চিকিৎসকদের অভিমত হলো— তার শরীরে অ্যানথ্র্যাক্সের উপসর্গ দেখা গিয়েছে। এছাড়া, রেডিওলজী রিপোর্টে তার প্রেসার কমে যাওয়া এবং শ্বাস কষ্টের বিষয়েও উল্লেখ করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন হলেও, পরিস্থিতি দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি অ্যানথ্র্যাক্সের হওয়া হতে পারে।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবাই হতবাক ও শোকাহত। প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে এবং পরবর্তী তদন্ত চলছে।