এ বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা এখনো খুবই কম বলে জানা গেছে, যা বেশিরভাগ বিশ্লেষকদের কাছে নিশ্চিত বলে মনে হচ্ছে। তবে, তিনি যদি সত্যিই পুরস্কার পান না, তাহলে তার প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে, সেটিই এখন ব্যাপক দুশ্চিন্তার কারণ। নরওয়ের নোবেল কমিটি এ বছর বিজয়ীর নাম আজ (শুক্রবার) সকাল ১১টায় (৯০৯ জিএমটি) ঘোষণা করবে, এবং এই ঘোষণা শোনার পর ট্রাম্পের ওপর কি ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। দেশটির সোশালিস্ট লেফট পার্টির এক মুখপাত্র বলেন, ট্রাম্প যেকোনো কিছু করতে পারেন, সুতরাং আমাদের সব কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশ্বজুড়ে চলমান সংঘাতের মধ্যে এ পুরস্কার নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। সুইডেনের উওসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতের সংখ্যা ছিল রেকর্ড পরিমাণ। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি আটটি বড় বড় সংঘর্ষের সমাধান করেছেন এবং এ কারণেই তিনি নোবেল পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ বছর তার হাতে পুরস্কার উঠছে না। সুইডেনের অধ্যাপক পিটার ভ্যালেনস্টেইন বলেন, ‘না, ট্রাম্প এবার পাচ্ছেন না— তবে ভবিষ্যতে হয়তো।’ অসলো পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নিনা গ্রেগার জানান, ট্রাম্পের কিছু উদ্যোগ যেমন গাজায় শান্তি আনার প্রচেষ্টা থাকলেও, তার বেশির ভাগ নীতিই নোবেলের মূল উদ্দেশ্য বিরোধী। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নিরস্ত্রীকরণ এ পুরস্কারের মূল লক্ষ্য, কিন্তু ট্রাম্পের চুক্তি থেকে ছাড়াছাড়ি, বাণিজ্যযুদ্ধের একের পর এক শুরু এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের কারণেঅবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে।’ নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ইয়োরগেন ওয়াতনে ফ্রিডনেস বলেন, ‘আমরা কারও কর্মকাণ্ড দেখে সিদ্ধান্ত নেই না; সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—শান্তির জন্য কতটুকু বাস্তব অবদান রয়েছে।’ এ বছর ৩৩৮ জন ব্যক্তি ও সংস্থা মনোনীত হয়েছ, যাদের মধ্যে সংসদ সদস্য, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আগের বিজয়ীও অন্তর্ভুক্ত। গত বছর শান্তি পুরস্কার পেয়েছিল জাপানের পারমাণবিক হামলায় বেঁচে যাওয়া সংগঠন ‘নিহোন হিদানকিও’। এ বছর সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে সুদানের ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুমস’, রাশিয়া বিরোধী নেতা নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া এবং ইউরোপের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ওডিআইএইচআর। নরওয়ের বিশ্লেষক হালভার্ড লেইরা মনে করেন, এবার নোবেল কমিটি মূলত শান্তির ঐতিহ্যবাহী ধারণায় ফিরছে। তিনি বলছেন, হয়তো এবার পুরস্কার এমন কারও হাতে যাবে, যিনি বিতর্ক তৈরি না করে বিশ্ব শান্তিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তবে অনেকের মতে, নোবেল পুরস্কারে সব সময় চমক অপেক্ষা করে, তাই এবার এ পুরস্কার কার হাতে যাবে, সেটি জানার জন্য সারা পৃথিবীর চোখ এখন চেয়ে আছে। সূত্র: এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান।