বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আজ প্রকাশ করেছে, সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সদস্যই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং এই মাটির গর্বিত সন্তান। তারা বিশ্বাস করে, বেশিরভাগ সেনা সদস্যই স্পষ্টভাবে চান যে, সীমা লঙ্ঘনকারীরা কঠোরভাবে বিচারপ্রার্থী হন, যাতে ভবিষ্যতে কোনো সরকার যেন সেনাবাহিনীকে অপব্যবহার করে গুম-খুনের মতো বর্বরতা করতে সাহস না করে। এই সর্বজনীন প্রত্যাশার প্রতি বিএনপি সম্পূর্ণ সমর্থন জানায়।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী একটি বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপি মনে করে, দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব সংরক্ষণে সত্য এবং নিরপেক্ষ বিচার অত্যন্ত জরুরি। কারণ, ন্যায়বিচার কেবল অতীতের অপরাধের শাস্তিই নিশ্চিত করে না, বরং ভবিষ্যতেও যেন কেউ এমন দোষের পুনরাবৃত্তি না করে, তার নিশ্চয়তা দেয়। আইনি প্রক্রিয়া ও মানবাধিকারের প্রতি সম্পূর্ণ সম্মানই পারে একটি শান্তিপূর্ণ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করতে। দেশে চলা উচিত ‘ল অফ দ্য ল্যান্ড’ নীতির অনুসরণে।
এছাড়াও বিবৃতিতে উঠে আসে যে, কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির দায় শুধুমাত্র তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া সমীচীন নয়, পাশাপাশি তাদের অপকর্মের জন্য সেই সংস্থাকে দোষারোপ করাও অনুচিত। একজনের কাজের ফলাফল বা অপরাধের দায় সরাসরি তার হওয়া উচিত, বিশেষ করে গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে।
বলা হয়, ফ্যাসিবাদী সময়ে সবচেয়ে বেশি গুম, খুন ও নিপীড়নের শিকার ছিল বিএনপি। এজন্য, তারা সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের পক্ষে। এখানে কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচয় নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্যক্তির অপরাধ এবং আইনের শাসন।
কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একক অপরাধের সঙ্গে একটি দেশের সেনাবাহিনীর আবেগ, আস্থা ও সম্মানের কোনও সম্পর্ক থাকা উচিত নয়, এবং অভিনয়ও উচিত নয়।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুমের ঘটনায় গত বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তিনটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সদস্য।
এবং শনিবার সকালেই ঢাকায় সেনানিবাসের মেস আলফাতে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, পরোয়ানা থাকা ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে সেনা হেফাজতেই আছেন, অথচ একজন এখনও লাপাত্তা।
আজকের খবর/বিএস