বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি নতুন পাঁচ দফা দাবি ও গুণগত নির্বাচনের উদ্দেশ্যে আরও দুটি মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ ঘোষণা আসে রবিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দলের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে, যেখানে দলের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এই নতুন কর্মসূচির ঘোষণা করেন।
নতুন এই কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার ঢাকা ও দেশের সব বিভাগীয় শহরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে, ১৫ অক্টোবর বুধবার দেশের সকল জেলা শহরে মানববন্ধনের পরিকল্পনা রয়েছে। জামায়াতের এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা জনসমর্থন ও ঐক্য দেখাতে চাইছে, যাতে তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য দেশের সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে নতুন দাবি হিসেবে সংখ্যানুপাতিক (প্রচারমূলক) পদ্ধতিকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করে একটি নিরপেক্ষ গণভোট আয়োজনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছে। মি. গোলাম পরওয়ার বলেন, “আমাদের দাবি আদায়ের জন্য গত ১ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশের গণসংযোগ, ১০ অক্টোবর ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে মিছিল, এবং ১২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকদের নিকট স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচিতে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ দেখিয়ে প্রমাণ হয়েছে যে, দেশের জনগণের একটি বড় অংশ এই দাবির পক্ষে। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতের দাবি মানা না হলে দেশের মানুষ রাস্তায় থাকবেন। সরকারের উচিত, জনগণের জনমত বিবেচনা করে জামায়াতের পাঁচ দফা দাবি দ্রুত মেনে নেয়া।
গোলাম পরওয়ার বলেন, “সরকার এখন পর্যন্ত আমাদের দাবি মানার চেয়ে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। এজন্য আমরা তৃতীয় দফার কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”
একের অংশ হিসেবে, ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার, ঢাকা মহানগরীতে উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের যৌথ উদ্যোগে যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও, জামায়াতের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি, সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার নিশ্চিত করা এবং স্বৈরাচারী দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম বন্ধের দাবি।
জামায়াতের মূল দাবির মধ্যে, জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনা, প্রারম্ভিক নির্বাচন ও সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি চালু করা অন্যতম। এর আগে, ১৫ সেপ্টেম্বর তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা, যা গত ২৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। এরপরেই, ৩০ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে, ১ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। এ সব কর্মসূচি চলাকালীন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামি দলও একই রকম অবস্থান সমর্থন জানিয়েছে।