প্রতিষ্ঠিত পোশাক শিল্পের উন্নয়ন ও বৈশ্বিক টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল শিল্পের সর্বশেষ উদ্ভাবন দেখানোর লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল এক্সপো ২০২৫। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে (BCFCC) ইকো এক্সপো এর আয়োজনে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। এরপর উপস্থিত ছিলেন বিজিবিএ ও ইবিএফসিআই এর পরিচালক নিপা জান্নাত, বিজিবিএ এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ, এমবিএবিডি’র প্রেসিডেন্ট নিজাম উদ্দিন বিপু, ইবিএফসিআই’র প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ালী তুষার উদ্দিন এবং বিজিইএ’র প্রেসিডেন্ট মাসুদার রহমান।
এই এক্সপোতে অংশগ্রহণ করেছেন চীন, ভারত এবং পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় টেক্সটাইল ও পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা প্রদর্শন করছে আধুনিক যন্ত্রপাতি, টেকসই ফ্যাব্রিক, স্মার্ট অ্যাপারেল প্রযুক্তি ও বিভিন্ন উদ্ভাবনী সমাধান। প্রথম দিন থেকেই এক্সপো প্রাঙ্গণ পরিপূর্ণ দর্শকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
এক্সপো পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিদেশি ও দেশি উদ্যোক্তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক যোগাযোগ ও অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠছে। পাকিস্তানের ইউনিকর্ণ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের শিপমেন্টের খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি। সরাসরি রুট চালু হলে বিনিয়োগ ও ব্যবসার পরিধি আরও বিস্তৃত হবে।’
চীনা কোম্পানির প্রতিনিধি লি হা জানান, ‘প্রথম দিন থেকেই ভালো সাড়া পাচ্ছি। বাংলাদেশের বাজারে চীনের বিনিয়োগ সব সময়ই শক্তিশালী, এই এক্সপো আরও বিস্তৃত করবে বলে আমি মনে করছি।’
একজন দর্শক হাবিবুর ইসলাম বলেন, ‘আমি আধুনিক চীনা টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি ও ফেব্রিক্স দেখতে এসেছি। বাংলাদেশের বিশ্ববাজারে অবস্থান ও সম্ভবনাগুলো বুঝতে পারছি, যা খুবই প্রশংসনীয়।’
আরেকজন দর্শক চৈতি ঘোষ মন্তব্য করেন, ‘মেলা সুন্দরভাবে আয়োজিত হয়েছে। এখানে ভারতের, পাকিস্তানের ও চীনের স্টলে এমন কিছু ফেব্রিক্স দেখছি যা আগে দেশে দেখিনি। এই মেলা বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করি।’
বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করেছে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ এই খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১১.৪৮ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি (CAGR ২০২৪-২০২৯) ধরে ২০২৯ সালে এই শিল্পের বাজার মূল্য পৌঁছাতে পারে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েঃ ৪০৮.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ইকো এক্সপোর সিইও রেজওয়ানুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল এক্সপো বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ও ট্রান্সফরমেটিভ ইভেন্ট। আমরা দেশের শিল্পকে বিশ্বদরে পরিচিত করে তুলছি— যা স্থানীয় শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সংযুক্ত করবে এবং টেকসই উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করবে।’
আজকের খবর/ওআর