আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দুর্নীতিবাজদের মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন। তিনি জানান, এ ব্যাপারে সাংবাদিকদেরও সচেতন ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অডিটরিয়ামে আয়োজিত কার্যশালায় তিনি এ বক্তৃতা দেন। সেখানে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ ও পার্টির মধ্যে এখনো দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা অনেক কম। তবে, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, রাজনৈতিক প্রভাব অনেক বেশি। যদি রাজনৈতিক নেতারা স্বচ্ছ ও সত্যনিষ্ঠ না হন, তাহলে দুর্নীতি থেকে মুক্তি পাওয়া কষ্টসাধ্য হবে।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, “সাংবাদিকরা যদি ভবিষ্যতে তাদের কণ্ঠশব্দ জোরালোভাবে উচ্চারিত করেন যাতে নির্বাচনকালীন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতরা মনোনয়ন পেতে না পারেন, তাহলে এর ফলাফল অনেক ইতিবাচক হবে। নির্বাচনের সময় মনোনয়ন বেচাকেনা রোধে সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।”
তিনি গণমাধ্যমকে দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে হুইসেল ব্লোয়ার হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, দুদকের কার্যক্রমের প্রায় ৭০ ভাগ তথ্য-উৎপত্তি আসে গণমাধ্যমের মাধ্যমে। সাংবাদিকরা সরাসরি না থাকলেও তারা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইনডিকেটর। তাঁদের মাধ্যমে আমরা দুর্নীতির বিষয়গুলো জানতে পারি এবং সেগুলো তদন্তে নেওয়া হয়। তিনি আশ্বাস দেন, সাংবাদিকরা যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে দুর্নীতি দমন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের দুর্নীতিবাজ সদস্যদের দুর্নীতি আটকের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। দুদক যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইন্টারপোলে রেড নোটিশ প্রকাশ করেছি এবং ফ্লাইট ও ফরেন মিনিস্ট্রির মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছি।
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার জন্য দুদক ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাহিদ, আবু হেনা মোস্তফা জামান, রিপোর্টার অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র্যাক) সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক। এ ছাড়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজরত বিভিন্ন সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন।
এটি ছিল বর্তমান সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি প্রচেষ্টা, যেখানে সাংবাদিক ও জনসাধারণের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।