বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভারতীয় একাধিক কোম্পানি দ্বারা উৎপাদিত তিনটি কাশির সিরাপের বিষক্রিয়া ঝুঁকি নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। এই সিরাপগুলো মূলত ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। খবর রয়টার্সের মাধ্যমে জানা গেছে, সোমবার (১৩ অক্টোবর) সংস্থাটি এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেয়।
সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়, এই তিনটি সিরাপের নাম হলো- শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি কোল্ডরিফ, রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালের সিরাপ রেসপিফরেশ টিআর এবং শেপ ফার্মার তৈরি সিরাপ রিলাইফ। এসব সিরাপের মধ্যে ডায়াথিলিন গ্লাইকোল নামে এক ধরনের রাসায়নিকের অস্বাভাবিক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
বিশেষ করে, ডব্লিউএইচও জানায়, এই সিরাপে ডায়াথিলিন গ্লাইকোলের মাত্রা স্বাভাবিক বা অনুমোদিত সীমার থেকে ৫০০ গুণ বেশি। ডায়াথিলিন গ্লাইকোল মূলত শিশুদের কাশির সিরাপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক, কিন্তু এর বেশি পরিমাণ ব্যবহার বৃথা নয়—এটি বিষের মতো হয়ে উঠতে পারে।
এই সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে জানা গেছে, গত আগস্টে ভারতের শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি কোল্ডরিফ সিরাপ খেয়ে ১৭ জন শিশুর মৃত্যু ঘটে। এর আগে ২০২৩ সালে উজবেকিস্তান, ক্যামেরুন ও গাম্বিয়ার বিভিন্ন শিশুর মধ্যে এই সিরাপের কারণে ১৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল।
ভারতের কেন্দ্রীয় ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের (সিডিসসিও) কর্মকর্তারা জানান, তারা ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তা সম্পর্কে সচেতন এবং এই বিষয়টি মাথায় রেখে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবেন। সরকার ও স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা বদ্ধপরিকর।
অনেক পিতা-মাতা ও অভিভাবকের জন্য এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা এখন মূল চ্যালেঞ্জ। তাই সব অসঙ্গতিপূর্ণ ও অনুমোদনহীন সিরাপের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ প্রদান করছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।