অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা একটি বিশেষ দলের পক্ষে প্রশাসনকে ব্যবহার করে নীরবে অপ্রত্যাশিত ও অস্বচ্ছ নির্বাচন করার ছক কষছেন। এই বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে সতর্ক করে দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাদের কাছে ষড়যন্ত্রকারীর নাম এবং তাদের কথোপকথনের রেকর্ড রয়েছে। এই সব তথ্য যদি সময়মতো সংশোধনের জন্য কার্যকর না হয়, তাহলে জনগণের সামনে সব প্রকাশ করে দেওয়া হবে।
আজ, ১৪ অক্টোবর, রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে এই বিষয়ে তিনি কথা বলেন। সরকারের অন্তত চার-পাঁচজন উপদেষ্টা একটি বিশেষ দলের পক্ষে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং প্রশাসনকে একটি দলীয় সরকারে পরিণত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন বলে তির্যক মন্তব্য করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একটি বিশেষ দলের প্রতিনিধিদের নিয়োগের জন্য প্রচণ্ড চাপ দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের নীলনকশা অনুসারে যখন কিছু লোক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনে নিয়োগ পেলে, তখনই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না – এই ধরনের ষড়যন্ত্রের ফলে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০১৪ বা ২০১৮ সালের মতো পরিকল্পিত নির্বাচন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে এবং জনগণ সাধারণত অংশগ্রহণ করবে না। সাংবাদিকতা, প্রশাসন,সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে নিরপেক্ষ, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অন্যথায়, কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে থাকছে গোপন রেকর্ড এবং কথোপকথনের প্রমাণ, যেগুলি জনগণের সামনে প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, সময় মতো পরিবর্তন না এলে তাদের নাম ও কথোপকথনের রেকর্ড জনসম্মুখে তুলে ধরা হবে।
তাহের জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা ১৫ বছর ধরে দেশের অবস্থা খারাপের দিকে নিয়ে গেছেন, তাদের জন্য এই বেইমানি এখন শেষ হয়ে আসছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা না করার জন্য উপদেষ্টাদের প্রতি তিনি অনুরোধ করেন। অতিরিক্ত সতর্ক করে তিনি বলেন, একদিকে যুবকদের মধ্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে সচেতনা তৈরি হয়েছে, তা আর বেশিদিন টেকা সম্ভব নয়।
প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাহের বলেছেন: আপনি ভালো মানুষ, তবে আপনার সরলতা কিছু দুষ্ট লোকের সুবিধা নিচ্ছে এবং আপনার ভুল ব্যবহার করছে। এইসব মানুষকে সরিয়ে দিতে হবে, নাহলে জনতা নিজেই তাদের সরিয়েপড়বে। তিনি শেষ মন্তব্যে জানান, এই ষড়যন্ত্রের কারণে দেশের ভবিষ্যৎ বিপদে পড়তে পারে এবং তা প্রতিরোধে জনগণকেই উদ্যোগ নিতে হবে।