রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, ইউক্রেনে এই দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করলে মস্কো-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং দেশের মধ্যে আসন্ন শান্তি আলোচনাও অপ্রিয় হয়ে পড়বে। দুই নেতার মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী এক ফোনালাপে পুতিন এই সতর্কতা উচ্চস্বরে উচ্চারণ করেন। সেই আলাপে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি ও শান্তির ভবিষ্যৎ আলোচনা কেন্দ্রান্তভাবে চলে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বরাত দিয়ে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার মস্কোতেও রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ এক ব্রিফিংয়ে বলেন, পুতিন আবারও স্পষ্ট করেছেন যে, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের বাস্তবতা বদলাতে পারবে না। বরং এই অস্ত্রের সরবরাহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দর্বুত্বপূর্ণ করে তুলবে এবং ইউক্রেনে শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রক্রিয়াকেও ক্ষতি করবে। উশাকভ লিখেছেন, এই ফোনালাপ খুবই ফলপ্রসূ, খোলামেলা ও গোপনীয় ছিল। আলোচনায় সর্বপ্রথম বিষয় ছিল ইউক্রেন পরিস্থিতি। পুতিন ট্রাম্পের সামনে বিস্তারিতভাবে বর্তমান যুদ্ধের পরিস্থিতি তুলে ধরেন। রুশ কর্মকর্তার ভাষ্য মতে, মস্কো ওয়াশিংটন জানিয়েছে, রুশ সেনারা এখনো সামনের লাইনে কৌশলগত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। অপর দিকে, ট্রাম্প দ্রুত এই সংঘাত সমাপ্তির পক্ষে জোরদার বলে মন্তব্য করেছেন। উশাকভ আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এক অন্যতম মূল বক্তব্য ছিল, ইউক্রেনের সংঘাত শেষ হলে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক বিনিময় ও সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আলোচনায় উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা সম্মত হয়েছেন, ট্রাম্প ও পুতিনের পরবর্তী বৈঠকের প্রস্তুতি অবিলম্বে শুরু হবে। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের সম্ভাব্য স্থান এ বিষয়ের জন্য আলোচিত হয়েছে। উল্লেখ্য, এই দুই নেতা প্রথম মিলিত হয়েছিলেন আগস্টে আলাস্কায়, কিন্তু এরপর থেকেই শান্তি আলোচনা চূড়ান্ত অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। ট্রাম্প এর ফলে ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল অবলম্বন করেছেন। এই ফোনালাপের পরে, ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন যে, তিনি ও পুতিন বুদাপেস্টে সাক্ষাৎ করে যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করবেন। এরআগে, দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা আগামী সপ্তাহে বৈঠক করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি, শুক্রবার হোয়াইট হাউসের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে ট্রাম্প। এই বৈঠকের মূল বিষয় হবে ইউক্রেনে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও দীর্ঘপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ। এর আগে, ট্রাম্প এই মাসের শুরুতে জানিয়েছিলেন যে তিনি ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কাছাকাছি রয়েছেন।