একটি দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটে, যখন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে, তাতে গাজার জন্য খুব বেশি সুখবর থাকেনি। যুদ্ধবিরতির পরও প্রধান দুটি পরিস্থিতির কারণে গাজার জীবনযাত্রা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো, ‘লাইফলাইন’ হিসেবে পরিচিত রাফা ক্রসিং এখনও বন্ধ রয়েছে। এই সীমান্ত চেকপোস্টটি গাজার শহর থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে মিশর সীমান্তে অবস্থিত। এটি হলো গাজার সঙ্গে বাইরের দুনিয়ার সংযোগের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ পথ, যেখানে থেকে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়।
ইসরায়েল এই ক্রসিং বন্ধ রেখেছে, কারণ তারা হামাসের উপর দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে ধরে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত রাফা ক্রসিং বন্ধ থাকবে এবং এটি পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত হামাসের দায়িত্ব কিভাবে পালন করছে তার ওপর নির্ভর করবে। তারা বলেছে, বন্দি বিনিময় ও মৃতদেহ ফিরিয়ে দেয়ার জন্য নির্ধারিত চুক্তি বা ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়ন দেখা হবে এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে।
আল জুমার (১৮ অক্টোবর) রাতে হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাফা ক্রসিং বন্ধ থাকায় মৃতদেহ উদ্ধার ও স্থানান্তরে অনেক বিলম্ব হবে। গাজায় বন্দি ও মৃতদেহ ফেরত আনার বিষয়টি যুদ্ধবিরতির কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এই বিষয়টিও রাফা ক্রসিং খোলার অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অতীতে, নয় মাস পর, ফেব্রুয়ারিতে সীমিত সময়ের জন্য রাফা ক্রসিং আবার খোলা হয়েছিল। তবে ইসরায়েল তখনও গাজায় প্রবেশের অনুমতি করেনি, যার ফলে ত্রাণের প্রবেশ খুব বেশি ছিল না এবং অসংখ্য রোগী বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর পরিকল্পনাও ঠেকিয়ে রাখা হয়। এর ফলে, দীর্ঘদিনের মতো মানবিক সংকট গাজায় তীব্র আকার নেয়। গত অক্টোবরে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৬৭ হাজার ৯৩৮ জন নিহত ও ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬৯ জন আহত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতি মানবিক বিপর্যয় এবং জরুরি প্রয়োজনের মুখোমুখি গাজার জনগণ, যেখানে প্রাণ সংশয়, নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য তারা সংগ্রাম করছে।