জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া এবং তাদের বর্তমান আচরণ আমাদের নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না, বরং স্বচ্ছতাও অনুপস্থিত। ভাবা যায়, একজন সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের উচিত ছিল সবসময় সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন পরিচালনা করতে, তবে এখনকার পরিস্থিতিতে তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
তিনি বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেস্টার সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। নাহিদ বলেন, নির্বাচন কমিশনে বিভিন্ন পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজন, অন্যথায় এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। তিনি সরকারের কাছে এই বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন এবং মনে করেন, এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন জরুরি।
নাহিদ আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন, যার অন্যতম ছিল জুলাই গণহত্যার বিচার। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য আদালতে হাজির হয়েছেন, যা আমরা সাধুবাদ জানাই। সরকার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জানাই, কারণ এটি আমাদের ন্যায়বিচারে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।
তাদের কথায়, এছাড়াও সারাদেশে শহীদ ও আহত পরিবারসহ বিভিন্ন মামলার প্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি লক্ষ্য করেন, অনেক মামলায় জামিনে আসামি ছাড়া পাচ্ছে এবং শহীদ পরিবারের জন্য হুমকি অব্যাহত রয়েছে। এ জন্য তিনি সরকারের কাছে মামলাগুলোর কী অবস্থা, কীভাবে এগুলো পরিচালিত হচ্ছে তা জানার দাবি জানিয়েছেন।
নাহিদ বলেন, July সনদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এনসিপি ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি, কারণ তারা জানাতে চায় যে, শুধু কাগজে সই করলেই হবে না, বরং বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা তার জন্য জরুরি। তাঁরা বলেন, শুধুমাত্র সনদে স্বাক্ষর করলেই হবে না, বাস্তবায়ন নিশ্চিত হওয়ার পরে তাঁরা এই সনদে স্বাক্ষর করবেন।
বিষয়টিতে আরও তিনি বলেন, জনপ্রশাসনের বদলির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এর পেছনে কী ভিত্তি রয়েছে, তা দেখতে চান তারা। শুনেছেন, প্রশাসনের বিভিন্ন অংশে রাজনৈতিক দখল এবং বণ্টন চলছে, যেখানে বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রশাসনের বিভিন্ন পদে নিজেদের লোক নিয়ে আগ্রহী। এমন অবস্থা চলতে থাকলে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে মনে করেন তিনি। তিনি দাবি করেন যে, উপদেষ্টা পরিষদের যাদের বিরুদ্ধে এই সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, তাদের বিষয় যেন প্রধান উপদেষ্টা নিজে সিদ্ধান্ত নেন।