গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের লুদুরিয়া গ্রামে এক পরিবারের জমি জোরপূর্বক দখল করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলায় তিনজন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তারা ঘটনার সত্যতা পেয়েছে এবং একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারে জানা গেছে, দাবিদাররা অভিযোগ করেন যে, তাদের পৈত্রिक জমি ১৯৮৯ সালে ইন হাউস দলিলের মাধ্যমে কিনেছিলেন হেনরি কস্তা। তার মৃত্যুর পর তাদের ওয়ারিশগণ সেই জমির দখল ও খাজনা পরিশোধ চালিয়ে আসছিলেন। তবে, একই এলাকার হৃদয় চন্দ্র দাস ২০২০ সালে একটি ‘আম-মুক্তারনামা দলিল’ দেখিয়ে ওই জমি জোরপূর্বক দখল করতে উঠে পড়ে লাগে। তিনি ভাড়াটে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলের উপর আঘাত হানে, প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং প্রায় ২০০টি আকাশমনি গাছ কেটে নিয়ে যায়, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা।
গাজীপুর জেলা জজ আদালত ২০২৩ সালে সেই দাউদানি দলিল বাতিল ঘোষণা করে। এরপরও হৃদয় চন্দ্র দাস তার দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ১৯ অক্টোবর ২০২৩ দুপুরে, ক্লেমেন্ট ডি কস্তা ও তার পরিবারের সদস্যরা বাগানে কাজ করছিলেন, তখনই হৃদয় চন্দ্র দাস ও তার সন্ত্রাসীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ চালায়। তারা তিন শ্রমিককে কুপিয়ে জখম করে, একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বিশেষ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হৃদয় চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের এই হামলা হয়েছিল। ঘটনাটি স্থানীয়রা দেখেছেন এবং আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে মামলা করার জন্য লরেন্স কস্তা কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন। মামলায় তার সঙ্গে আরও ক’জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী রাজনৈতিক আশ্রয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে হৃদয় চন্দ্র দাস। তিনি স্বীকার করেননি হামলার কথা, বরং দাবি করেন যে, তাদের সঙ্গে জমির বিরোধ চলছিল। এ বিষয়ে কথা বললে ওসি আলাউদ্দিন জানান, অভিযোগ পেয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।


















