ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দাপটের সাথে হারিয়ে দিয়েছে। এই জয়ে সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসানের জোড়া ফিফটি সহ নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেনের ধারাবাহিক ঘূর্ণিঝড়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা ১৭৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হার মানে। এই জয়ের ফলে বাংলাদেশ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। এটা আবারও প্রমাণ করল বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের শক্তি ও উদীয়মান প্রতিপত্তি। ২০২৪ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর এই সিরিজ জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। মিরপুরের সবুজ গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের জন্য এটি ছিল এক অসাধারণ মুহূর্ত, যেখানে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ঘূর্ণি নৈপুণ্য দেখা গেল।
দুপুরে টস জিতে ব্যাট করতে নামে দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। শুরুতেই তারা গড়ে তোলে ১৭৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি, যা ম্যাচের পুরোটাই ঘুরিয়ে দেয়। সৌম্য ৮৬ বলে ৯১ রান করেন, আর সাইফ ৭২ বলে ৮০ রান করে ফিরতে বাধ্য হন। এরপর মধ্যাঞ্চলে হৃদয় (২৮) ও শান্ত (৪৪) দলের জন্য ২৯৬ রান সংগ্রহ করেন, যা সত্যিই এক লড়াকু সংগ্রহ।
প্রতিপক্ষের বোলারদের মধ্যে আকিল হোসেন কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেন—১০ ওভারে ৪১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দলের লজ্জা কিছুটা কমান।
তবে এরপর দেখা যায় একতরফা ঘূর্ণিঝড়ের খেলা, যেখানে স্পিনারদের সামনে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা অসহায় হয়ে পড়েন। শুরুতেই নজর কাভেন নাসুম আহমেদ—৬ ওভারে মাত্র ১১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনি দারুণ একটি আলাদা মনোভাব দেখান। তাকে নিখুঁত সঙ্গ দেন তানভির ইসলাম (২/১৬) ও রিশাদ হোসেন (৩/৫৪), যাঁরা প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের অপ্রতিরোধ্য ঘূর্ণি দিয়ে ধ্বংস করে দিলেন। নেতৃত্বেও থাকা মিরাজ তার পাশে থেকে ২টি উইকেট নেওয়ার মাধ্যমে নিজের প্রতিবাদ জানান।
সম্পূর্ণ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ব্যাটসম্যানরা টিকে ছিল মাত্র ৩০.১ ওভারে, এবং তাদের স্কোর গুটিয়ে যায় মাত্র ১১৭ রানে। আকিল হোসেন একাই চেষ্টা করেন লড়াই করার, ১৫ বলে ২৭ রান করেন। বাকিরা কেউই ঘূর্ণি আঘাতের মুখে পড়ে বিপুল দুর্দশার শিকার হন।
এই জয় বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয় (১৭৯ রানে) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে বিজয়। এটি বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন একটি মাইলফলক এবং দলের মনোবল অটুট রাখার জন্য এক বিজয়সংযোজক মুহূর্ত।


















