বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী নির্বাচন করার আগে কোনোভাবেই গণভোটের ব্যবস্থা হবে না। শনিবার (১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, কিছু একটি অপতৎপরতা পরিকল্পিতভাবে দেশকে বিভ্রান্ত করে দিতে চাচ্ছে এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলাতে চাইছে। তবে তাদের এমন চেষ্টা সফল হবে না, কারণ একাত্তর আমাদের জীবনের অংশ ও আমাদের গর্বের ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে, কিন্তু জাতি কখনো ভুলবে না যে, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের স্বাধিকার ও স্বাধীনতার পথপ্রদর্শক।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, যদি অগাস্টে অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা হতো, তবে অপশক্তির মাথাচাড়া দেওয়ার সাহস থাকত না। তিনি জানান, বিএনপি ৩১ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের সকল সংস্কারের ব্যাপারে স্পষ্ট করেছেন। তিনি যোগ করেন, ভোটের পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, কিন্তু আসল সিদ্ধান্ত নিতে সংসদই শেষ কথা বলবে। তিনি বলেন, বৈধ নির্বাচন না হলে কোনো নির্বাচন হবে না। তবে বিএনপি সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র বিকাশে কাজ করে যাবে।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনার ভারত থেকে সম্প্রতি দেয়া সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতে বসে তিনি বিভিন্ন মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানানো উচিত, কারণ তার গণতান্ত্রিক বিচার এবং জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।
অপরদিকে, শনিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, বিএনপি এখন ‘অর্জুন গাছের ছাল’-এর মতো; যার যখন প্রয়োজন, তখন কেটে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বহুরূপী শক্তির ছত্রচ্ছায়ায় মানুষ। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির করণীয় হলো ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করা।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আরও মন্তব্য করে বলেন, তৎকালীন সরকারের সময় জামায়াত নানা সুবিধা পেয়েছে। তিনি জানান, জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতা একসময় জাসদের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং গলাকাটা পার্টির সঙ্গে পরোক্ষ সম্পর্ক ছিল। ৫ আগস্টের পর থেকে শিবিরের অনেক সদস্য ছাত্রলীগের মধ্যে থেকে বের হয়ে এসেছে, আর এখন তারা প্রকাশ্যেই দাবি করছে তারা আগে থেকে সক্রিয় ছিল।
আলাল আরও বলেন, জামায়াত এখন রূপ বদলাচ্ছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সমাবেশের আয়োজন করছে, যেন বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। তিনি দাবি করেন, বিএনপি এখন ‘অর্জুন গাছের ছাল’-এর মতো, যার যখন প্রয়োজন, কেটে নিয়ে যায়। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার কারণে জামায়াতের নিষিদ্ধকরণ দাবি করেন তিনি।


















