দেশের অন্যতম প্রধান রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো ফলাফল দেখিয়েছে, তবে এর পিছনে রয়েছে কিছু উদ্বেগজনক তথ্য। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিমান গত বছর ২০০০ কোটি টাকার বেশি বকেয়া থাকলেও চমকপ্রদভাবে ৯৩৭ কোটি টাকার রেকর্ড মুনাফা ঘোষণা করেছে। এই মুনাফা দেশটির ৫৫ বছরের ইতিহাসে.Record এভাবে দাঁড়িয়েছে, যা বিমানের সর্বোচ্চ লাভের দিক থেকে নতুন রেকর্ড।
বিমান বাংলাদেশের এই সফলতার পেছনে মূল কারণ হিসেবে দেখা যায়, তারা গত বছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার যাত্রী পরিবহন করেছে, যা প্রতিদিনের ওপর ভিত্তি করে বললে অনেক বেশি। এর পাশাপাশি, কার্গো পরিবহন ৪৩ হাজার ৯১৮ টন ছাড়িয়েছে এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর ফলে তাদের আসন ভরা থাকায় আয় বেড়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়া, জানুয়ারিতে বিমান ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রি হয়েছে, যা তাদের বাজারে ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রমাণ।
তবে, এই সফলতার মধ্যে রয়েছে একটি বড় সমস্যাও। বিমান ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েলকে ২০০০ কোটি টাকার বেশি দেনা থাকলেও, বিমান আনুষ্ঠানিকভাবে এই দেনার পেমেন্ট এখনও সম্পন্ন করেনি। পদ্মা অয়েল দেশের একমাত্র জেট ফুয়েল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, যা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুন মাসের হিসেব অনুযায়ী, তারা বিমানকে ২১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি আর্থিক প্রাপ্যতা রয়েছে। তবে, বিমান এবছর কংক্রিটভাবে এই হিসেবের অর্ধেক বা তার কম পরিশোধ করে থাকলেও, তারা এখনো বড় পরিমাণে দেনার চাপে থাকতে থাকা সত্ত্বেও বিশাল লাভের সংবাদ মাধ্যমে তুলে আনছে।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা এ বি এম রওশন কবীর জানান, এই রেকর্ড মুনাফার খবর নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতেই পারে, তবে অনিরীক্ষিত হিসেব অনুযায়ী তারা এই লাভ দেখাচ্ছে। অন্যদিকে, সরকারি অফিসিয়ালরা বলছেন, এই অপ্রত্যাশিত লাভের পেছনে এখনও চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও দেনার বিষয়গুলো রয়েছে।
অবশ্য, এই সাফল্য দেশের অর্থনীতির জন্য একটু হলেও ইতিবাচক বার্তা দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে বিমানটি তার পরিষেবার মান ও বিপণনের ক্ষেত্রেও উন্নয়ন করছে। তবে, দেনার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।