জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদান-প্রদান ও কার্যক্রমে বাধা তারাতে এবং অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও চার জন কর্মকর্তা বরখাস্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সোমবার (১৮ আগস্ট) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) এক আদেশে কার্যকর করা হয়। বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা হলেন সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু; খুলনা জেলার মোংলার কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার আবুল আলা মোহাম্মদ আমীমুল ইহসান খান; চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির যুগ্ম কমিশনার সানোয়ারুল কবির এবং খুলনার কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের উপকমিশনার সাইদুল ইসলাম। এই বরখাস্তের নির্দেশনা ও আদেশে তারা অবিলম্বে কর্মচ্যুত হয়েছেন।
আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান এই চার কর্মকর্তার বরখাস্তের পৃথক চারটি আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।
প্রথমত, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১২ মে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি হওয়ার পর থেকে তারা দায়িত্বশীলতার অভাবে দাপ্তরিক কাজে বাধা দেন। এছাড়াও, তারা কাজ ত্যাগ করে রাজস্ব ভবনে আসতে বাধ্য করেন এবং দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করেন। এই সকল কার্যকলাপের জন্য তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা-৩৯ (১) অনুযায়ী, এই চার কর্মকর্তাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের এই সময়ে বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত মে ও জুন মাসে রাজস্ব শাখায় যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনশন ও আন্দোলন করেছিলেন। ২৮ ও ২৯ জুন তারা দেশব্যাপী কর্মবিরতিতে যান, যা ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় পরে প্রত্যাহার হয়। এসব আন্দোলনের সময় থেকেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। এখন পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে, এবং চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তখনকার একজন কমিশনারকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও, দুদক এনবিআরের ২ সদস্যসহ মোট ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, যাদের বেশিরভাগই ওই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।