কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক টানাপোড়েন শুরু হয়। এর পর থেকেই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বেড়ে যায়। তবে, এই পরিস্থিতির মধ্যে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয় স্তরে দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জলস্রোতগুলোর পানি বিষয়ে, বিশেষ করে সিন্ধু নদীর অবস্থা নিয়ে।
সম্প্রতি ভারত জানায়, সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তানের জন্য বন্যার আগাম সতর্কতা দিয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানায়, নয়াদিল্লি পাকিস্তানের কাছে জানিয়েছে যে, জম্মুর তাওই নদীতে ভারী বর্ষণের কারণে পানি প্রবাহ বেড়েছে, যা পাকিস্তানের নিচু এলাকাগুলোর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দেন পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের কাছে। তবে, এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক পাকিস্তানি প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। যদি এই সতর্কতা সত্য proves, তাহলে এটি দুই দেশের মধ্যে প্রায় তিন মাস পর প্রথম বড় ধরনের যোগাযোগ বলে ধরা হচ্ছে।
পাকিস্তান, এই সতর্কবার্তার পর, নিজ দেশের সাধারণ মানুষকে সতর্ক করেছে। নিচু এলাকা এবং নদীর সংলগ্ন অঞ্চলে থাকা বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মে মাসে কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়, যা ভারতের অভিযোগ পাকিস্তানের প্রতি ছিল। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এরপর মে মাসের শুরুতে দুই দেশের মধ্যে দশকের সবচেয়ে তীব্র সামরিক উত্তেজনা দেখা দেয়, যা পরে মার্কিন মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতি দিয়ে সমাপ্ত হয়।
সিন্ধু পানি চুক্তি কি?
১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে, বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ভারত দুটি নদীর (সতলজ, বিয়াস, রাভি) ওপর পূর্ণ অধিকার পায়, এবং পাকিস্তান পানির অধিকার পায় ইন্দুস, ঝিলম ও চেনাব নদীর। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কোনও পক্ষ একতরফাভাবে পানি সরবরাহ বন্ধ করতে পারবে না। যেকোনো বিরোধের নিষ্পত্তি হতে হবে নিরপেক্ষ সমাধানকারী, সালিশি আদালত বা আদালতের মাধ্যমে।
সূত্র: জিও নিউজ, এপি, রয়টার্স