কয়েক মাস ধরে দেশের বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার চাল আমদানির অনুমতি দেয়। অনুমতি পাওয়ার এরপর ১২ আগস্ট থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম চালের আমদানি শুরু হয়। তবে শুল্কের জটিলতায় ব্যবসায়ীরা শুরুতে বন্দর থেকে চাল খালাসে সমস্যায় পড়েন। বিভিন্ন নাটকীয়তার পর ১৮ আগস্ট শুল্ক কমিয়ে এনবিআর ২ শতাংশ এআইটির ঘোষণা দেয়, এরপর ব্যবসায়ীরা দ্রুত চাল খালাস করতে সক্ষম হন।
ভারত থেকেও চালের আমদানি শুরু হলেও বাজারের দাম এখনো কমেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানির পরিমাণ আরো যদি বাড়ে, তবে দাম কমতে পারে। শনিবার (২২ আগস্ট) বাজার পরিদর্শনে দেখা গেছে, নাজিরশাইল চালের দাম এখনো ৮৫ থেকে ৯0 টাকা, মিনিকেট ৮0 টাকা, এবং ব্রি-২৮ ও ২৯ চালের দাম ৬0 থেকে ৬2 টাকা প্রতি কেজি।
ভারতীয় চাল বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশের পরেও দাম না কমায় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ভারতে চালের সরবরাহ এখনও এক-দুদিনের বিষয়। বাজারে এই চালগুলো ৮0 থেকে ৮2 টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর যদি আরো বেশি চাল ঢুকে, তবে দাম নিয়ন্ত্রনে আসতে পারে।
এদিকে, চার মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৩১৫ মেট্রিকটন চাল আমদানি হয়েছে। আমদানিকারকরা জানাচ্ছেন, দেশের বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে সরকার ভারত থেকে মোটা চাল আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আশা করা হচ্ছে, চালের এই আমদানির ফলে বাজারে দাম কমবে।
বেনাপোলের চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হাজী মুসা করিম অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুস সামাদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভারত থেকে ৯টি ট্রাকের মাধ্যমে ৩১৫ মেট্রিকটন মোটা চাল আমদানি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করেছিল। চলতি বছরের ২৩ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত এই আবেদন গ্রহণের সময় ছিল। দেশের অন্যান্য অংশের মতো বেনাপোলের আমদানিকারকরা এই অনুমতির জন্য আবেদন করেন এবং বেশ কয়েকজন আমদানিকারক চালের আইপি বা অনুমতিপত্র পেয়ে চাল আমদানি শুরু করেছেন। আশা করা হচ্ছে, রবিবার থেকে চালের আমদানি আরও বৃদ্ধি পাবে। এই আমদানি বাজারে চালের দাম কমাতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা দাম কমে যেতে পারে। উন্নত মানের চিকন জাতের চাল ৬৭ থেকে ৭০ টাকায় এবং মোটা স্বর্ণা জাতের চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হতে পারে।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বন্ধের পর শুরুর প্রথম দিনে ৯ ট্রাক দিয়ে ৩১৫ মেট্রিকটন চাল আমদানি হয়েছে। আরও বেশ কয়েকটি চালবোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।