জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ও গান মুক্তিকামী মানুষকে সাহস ও অনুপ্রেরণা দিয়েছে, যা তাদের মনোভাবকে আরও উজ্জীবিত করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার রাতে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণী বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
তারেকে রহমান বলেন, নজরুলের কবিতা, গান এবং সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে এক নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, ৯০-এর গণআন্দোলন এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় তার রচিত কবিতা ও গান এই দেশের মুক্তি কামনায় উজ্জীবিত করেছে, সাহস যোগিয়েছে। যুগ যুগ ধরে যারা অধিকারহারা হয়ে থেকেছে, তারাও তার সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে প্রতিবাদে সাহস পেয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম মানবপ্রেমের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মানুষকে ভালোবাসা এবং তাদের কল্যাণের জন্য নিবেদিতভাবে কাজ করতে তার সাহিত্য আমাদের প্রেরণা দেয়। তার রচনায় সদা স্বদেশপ্রেমের দীপ্তি রয়েছে, যা চিরকাল আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।
তারেক রহমান বলেন, আজ তার ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তার প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করছি। আমরা তার রূহের শান্তি কামনা করি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার দ্রোহী মনোভাব, মানবতা ও সমতা প্রতিষ্ঠার চেতনায় দীপ্ত এই কবি আজও আমাদের প্রেরণার स्रोत। ১৯৭৪ সালে তার জীবনাবসান হলেও, তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কবি ও সংগীতজ্ঞ হিসেবে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় থাকবেন। তিনি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ করলেও মূলত আমাদের জন্য তিনি একজন কবি।
তারеке আরও বলেন, শৈশব থেকেই কঠিন সংগ্রাম করে বড় হয়েছে তিনি, এজন্যই তার মধ্যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের স্বাভাবিক প্রবণতা জন্মেছে। তিনি অবহেলিত ও প্রতিরোধ্য মানুষদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। তার লেখা কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির সমৃদ্ধ ভাণ্ডারকে আরও পরিপূর্ণ করেছে। আজও তার কবিতা ও গান শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে মানুষের মুক্তির পথ দেখায়। তাঁর শ্রেণি সংগ্রাম তাকে বিদ্রোহী কবির খ্যাতিও দিয়েছে।
আরেকটি বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেন, কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি। তাঁর ২৩ বছরের সাহিত্যকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এক নবচেতনা এনে দিয়েছে। তিনি ছিলেন বাঙালি জাতির অন্যতম প্রধান কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও সংগীতজ্ঞ, যার সাহিত্যকর্মের মধ্যে মানবতার কথা বারবার উচ্চকিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তার কবিতা ও গান যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ ও প্রতিবাদ তার শিল্পকর্মের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি শোষিতা ও অবহেলিত মানুষের মুক্তির জন্য লড়েছেন। ফলে, ব্রিটিশ শাসকদের কাছে তিনি অটির হয়ে উঠেছিলেন। দমন-পীড়নের শিকারও হয়েছেন।
ফখরুল আলমগির মতে, কাজী নজরুল ইসলাম এক অনন্ত দ্রোহের প্রতীক। তার সাহিত্য ও শিল্পকর্ম বহুমুখী প্রতিভার প্রমাণ। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন কবি। তার রচনা আমাদের স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে, সমাজে শান্তি, সাম্য ও মানবতার প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। তিনি চিরকাল আমাদের মধ্যে অমর থাকবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।