ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে তাঁদের হয়রানি ও অযৌক্তিক তিন দফা দাবির প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পৌনে ৭টা পর্যন্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশলী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনকারীরা গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় মহাসড়ক আধাঘণ্টার জন্য বন্ধ করে রেখে চলাচল বন্ধ করে দেন, এতে সাধারণ যাত্রীরা ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন।
বিপুলসংখ্যক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মিছিল নিয়ে সিটিটি মোড়ে জড়ো হন, এরপর জয়দেবপুরের শিববাড়ি মোড় হয়ে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এসে অবরোধ চালান। কর্মসূচি চলাকালে বক্তারা বলেণ, সরকারী বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিতে অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা রুখতে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা কারিগরি শিক্ষার खिलाफ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায়, লক্ষাধিক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী ও পাঁচ লাখের বেশি পলিটেকনিক শিক্ষার্থী আরও কঠোর কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত থাকবে।
বক্তারা সাত দফা দাবির বিস্তারিত উল্লেখ করে বলেন, জিয়াউর রহমানের ১৯৭৮ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ছাড়া অন্যদের নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। সব প্রতিষ্ঠানতে জনবলের গ্রহণযোগ্য অনুপাত হলো ১:৫, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের স্বীকৃতি হিসেবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নির্দেশিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে ৩০% পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে। ১৯৯৪ সালে খালেদা জিয়ার জারি করা প্রজ্ঞাপন অমান্য করে অন্য ক্যাডারে নিয়োগ বন্ধ এবং প্রকৌশল পেশা পরিবর্তনে কড়াকড়ি আরোপের আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়াও, মিথ্যাচার ও কুৎসা রটিয়ে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায় some বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষার মান রক্ষার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:১২ নিশ্চিত করতে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা আনতে আহ্বান জানানো হয়। আন্দোলনকারীরা ‘তুমি কে, আমি কে? ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার’ ও ‘জাগো রে, ডিপ্লোমারা জাগো’ শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রকৌশল ক্ষেত্রে কর্মতার বিভাজন, সংশ্লিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য নির্দিষ্ট পদ সংরক্ষণ, সরকারি ও অ সরকারী প্রকৌশল সংস্থাগুলতে ডিপ্লোমা ও বিএসসি প্রকৌশলীদের জন্য হারের নির্দিষ্টকরণ, উপ-সহকারী থেকে সহকারী প্রকৌশলীর পদোন্নতির হার ৩৩% থেকে ৫০% এ উন্নীতকরণ, প্রকৌশল শিক্ষা শিক্ষাক্রম আধুনিকায়ন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত উন্নত করা এবং প্রকৌশল পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট নিয়ম ও নিয়োগের মানদণ্ড কঠোর করা।
একজন বক্তা বলেন, ‘গ্যাটম্যান পদের জন্য যদি বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা আবেদন করে, তখন অফিসের নিয়ম-কানুনে অপচয় ও সিন্ডিকেটের সমস্যা সৃষ্টি হবে। প্রকৌশল পেশায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করছে। এই দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন চান আমরা।’ পাশাপাশি, এ সময় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তরিকুল ইসলাম জানান, সাড়ে ৬টা থেকে পৌনে ৭টা পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, যার ফলে সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।