যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ আরও প্রায় ৮০ জন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার ভিসা বাতিল করেছে, যার ফলে আব্বাস আগামী মাসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও অভিযোগ করেছেন, ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং তারা একতরফা স্বীকৃতি চায় একটি কাল্পনিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইসরায়েল।
এবারের অধিবেশনে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য সম্মতি আশা করছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ, যেমন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে থাকায়, যুক্তরাষ্ট্র আগেই ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
মার্কো রুবিও বলছেন, জাতিসংঘের চুক্তি অনুযায়ী নিউইয়র্কে থাকা ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নিতে পারবে, তবে ভিসা বাতিলের এই পদক্ষেপ তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা তা স্পষ্ট নয়।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এই ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তকে “আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের চুক্তির পরিপন্থী” বলে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিচ বলেছেন, আসন্ন দুই-রাষ্ট্র সমাধানপ্রক্রিয়া সফল করতে সকল সদস্য ও পর্যবেক্ষক দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি অতীব জরুরি।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা’র এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সব সময়ই দুই-রাষ্ট্র সমাধান বিরোধিতা করে আসছেন। তাঁর দাবি, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া মানে ‘হামাসের সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা’।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর, যেখানে প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫১ জনকে আটক করা হয়, তখন থেকে গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায় ইসরায়েল। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেই সময় থেকে গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
বর্তমানে, ফিলিস্তিন জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪৭টির স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে, এর কোনও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্ত নেই। পশ্চিম তীরে অনেক অংশই ইসরায়েলি দখলে থাকে এবং গাজা পানির দখলে থাকায়, কাগজে স্বীকৃতি থাকলেও বাস্তবে খুব বেশি বদল আসেনি বলে মনে করা হয়। সূত্র: বিবিসি
আজকের খবর — বিএস