বাংলাদেশের মূলধারার ব্যাংকিং সংস্কার প্রক্রিয়াকে বাধা দেওয়ার চেষ্টায় থাকলেও আদালত এই চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করেছেন। সম্প্রতি আদালত রিটকারী গ্রুপকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন, যা রিটের অবৈধতা ও প্রতারণামূলক আচরণের প্রতিবাদে একটি শক্ত বার্তা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এই গ্রুপের নেতৃত্বে থাকা বশির আহমেদ, এম.এ. সবুর ও রাসেল আজিজ গত জুলাইয়ে ইউসিবির ১০ শতাংশের বেশি শেয়ারহোল্ডার ছিলেন বলে দাবি করে শেয়ার জব্দের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেন। এর আগে, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইউসিবির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন করে পুনর্গঠনের নির্দেশ দেয়। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে, এই গ্রুপের একজন অংশ পুনরায় পিটিশন দাখিল করে, যেখানে তারা পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন ও এজিএমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে। তবে এই আবেদনগুলোতে আদালত প্রথমে এজিএম স্থগিত করেন। এরপর আপিল বিভাগের চেম্বার জজ এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার অনুমতি দেন। সম্প্রতি, ইউসিবির আইনজীবীরা জানান, কিছু পিটিশনকারীরা দেশের বাইরে থাকেও এমন হলফনামা জমা দিয়েছেন যেন তারা উপস্থিত ছিলেন, যা উল্টো শপথভঙ্গের সামিল। ব্যাংকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, মিথ্যা তথ্য দিয়ে শেয়ার হোল্ডিংয়ের নিয়ম ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, এই অপপ্রচেষ্টা ব্যাংকের সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই চালানো হয়েছিল। বর্তমানে ইউসিবি এক শিল্পোৎপাদনমূলক সংস্কার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমানতকারীদের আস্থা পুনঃস্থাপন এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দৃঢ় করার কাজে নিবেদিত। এই বছর ইতিমধ্যেই ব্যাংকের নেট ডিপোজিট ৯,৫০০ কোটি টাকার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নতুন একাউন্টের সংখ্যা ৪ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি হয়েছে, যা এক রেকর্ড। আদালত রায়ে বলেছে, এইসব পিটিশনকারীর বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে একই বিষয়ে নতুন মামলা দায়েরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং তাদেরকে ১২ লাখ টাকা ইউসিবির এবং ৩ লাখ টাকা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও মার্শাল অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায় একটি সতর্কতা হিসেবে কাজ করবে যে, ব্যাংকিং খাতে কোনো ধরনের সংস্কার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে তা কঠোর নজরদারির আওতায় থাকবে। এর মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির মুখোমুখি করার বিষয়টিও স্পষ্ট হয়েছে। ইউসিবির এই কার্যক্রম দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য এক শক্তিশালী বার্তা, যেখানে নিয়ম ভঙ্গকারীদের কোনও ছাড় নেই।