অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে সোনার দাম, যা এখন নতুন এক ইতিহাস গড়ে চলেছে। বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়ে ৩ হাজার ৫০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই উত্থানের পেছনে মূল কারণ হলো মার্কিন ডলার দুর্বল হয়ে পড়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের সম্ভাব্য সুদহার কমানোর আশঙ্কা। বিনিয়োগকারীরা এই পরিস্থিতিতে নতুন করে সোনা কিনতে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন, ফলে মূল্যবৃদ্ধির এই আলোর ঝলক দেখা গেছে। রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববাজারে সোনার দাম পৌঁছেছে ৩,০৫৮ দশমিক ৫০ ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর মান প্রায় ৪ লাখ ২১ হাজার ২০ টাকা (১ ডলার=১২০ টাকা ধরে)। এর মাধ্যমে প্রতি ভরির সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ২৬০ টাকার মতো। হিসাব করে দেখা গেছে, এই বছরটিতে সোনার দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি, যা একে ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে দিয়েছে। আর্থিক বিশ্লেষক কাইল রড্ডা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল পরিস্থিতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা এই মূল্যবান ধাতুর বাজারকে আরও উদ্দীপনা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেলের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের কারণে ডলারভিত্তিক সম্পদে আস্থার ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প তার সমালোচনায় বছরের পর বছর ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে লক্ষ্য করেন, বিশেষ করে সুদহার না কমানোর জন্য। সম্প্রতি ট্রাম্প কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়াশিংটন সদর দপ্তরের ব্যয়বহুল সংস্কারকাজ নিয়েও সমালোচনা করেছেন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, ফেডের স্বাধীনতা থাকা উচিত, তবে এখন অনেক ভুল করেছে। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্পের সময় অনেকে ফেডের গভর্নর লিসা কুককে জালিয়াতির অভিযোগে বরখাস্ত করার দাবি তুললেও, এখন ১৭ সেপ্টেম্বর ফেডের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ বলে জানানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, সুদহার কমানোর আশঙ্কা ও ফেডের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন, ফলে মার্কিন ডলার এখন খুবই দুর্বল অবস্থানে। ডলার এখন দেড় মাসের মধ্যে its lowest সঙ্গে আসছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন যে, যখন সুদহার কমে যায়, তখন সোনার মতো সুদবিহীন সম্পদ বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যদিও সোনায় সরাসরি সুদ পাওয়া যায় না, তবে সুদহার কমলে সোনার মূল্য আবারও সম্ভবত বাড়বে।