আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস ফ্যাসিস্ট দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন এবং একাধিকবার দলটির নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি একটি বিএনপি-প্রকাশিত অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতি বিষয়ক ব্যাপারটি সারা দেশ ব্যাপি আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার পর যখন এর সত্যতা জানার জন্য অপুকে যোগাযোগ করা হয়, তিনি নিরবের উপর দায় চাপিয়ে দেন। তবে নিরবের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বহু চেষ্টা করেও প্রেরিত খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলায় আয়োজিত বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জানিপুর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন অপু বিশ্বাস। এই অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন চিত্রনায়ক নিরব হোসেন। অনুষ্ঠান আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা ও আমন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন খোকসা পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন।
অপু বিশ্বাসের গমনের কিছু সময় পরে তিনি দ্রুত ওই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন, যাতে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। ঘটনার পেছনের বিষয়ের ব্যাখ্যায় অপু বলেন, তিনি কোনো নির্দিষ্ট কাদের অনুষ্ঠানে যাওয়ার বিষয়ের বিষয়ে নিরব তাকে আগেই জানাননি। তিনি পরিষ্কার জানতেন, এটি একটি স্কুলে অনুষ্ঠান। এরপর তিনি সেখানে উপস্থিত হন, কিন্তু পথের মধ্যে জানতে পারেন বিষয়টি। ফিরে আসতে চাইলে নিরব আশ্বাস দেয় যে, কিছু হবে না এবং চিন্তার কিছু নেই।
অপু বিশ্বাস আরও বলেন, ‘আমি এখন অপ্রতিরোধ্যভাবে অভিনয় নিয়ে বেশি ব্যস্ত নই, তাই সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নিই। কারণ আমাকে অর্থ উপার্জন করতে হয়। অনেকেই আমাকে ফিতাকাটা নায়িকা বলে থাকেন, তাতে আমি ক্ষুব্ধ নই। আমি নিজের জীবনের জন্য লড়াই করছি, একটি সন্তান پسند করি, শিল্পী হিসেবে জীবন চালাতে চান।’
অপুর ভাষ্য অনুযায়ী, শিল্পীদের রাজনীতি করা উচিত নয়। তিনি স্বীকার করেন, অনেকে অনেক বেশি বাড়াবাড়ি করেছেন, তবে এখন মনে হচ্ছে ভুল করেছেন। অপুর মতে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি রাজনৈতিক আয়োজন থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। তিনি আর এসব বিতর্কে জড়িয়ে থাকতে চান না। তিনি বলেন, ‘আমি এমন কিছু করতে চাই না যা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পড়ে।’
শাসনামলে অনুদানের সিনেমার প্রযোজক হিসেবে নিজের অবস্থান উল্লেখ করে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘আমি এখন এই পরিস্থিতির থেকে দূরে থাকতে চাই।’
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে অপু বলেন, ‘সাত ঘণ্টা জার্নি করে আমি আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমি বগুড়ার মেয়ে। এর আগে রাজবাড়ীতে এসেছি, এবার এখানে আসার জন্য বড় ভাই রিপন ভাইকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চান।’
অন্যদিকে, নিরব বলেন, ‘আমি সিনেমার মানুষ। সিনেমা নিয়েই আমার বেশি আগ্রহ। তবে এখানে এসেছি just রিপন ভাইয়ের আমন্ত্রণে, আমি আশাবাদী ওঁরা করবেন আপনাদের সঙ্গে সঙ্গেই থাকবেন।’
একই সময়ে, খোকসা পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেনের বিরুদ্ধে সংগঠনের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপি পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। অনেকের মতে, এই বিষয়টি এমন পরিস্থিতিতে এসেছে যেখানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও জাসাস নেতাদের দায় এড়ানো সম্ভব নয়।
অপরদিকে, অপু বিশ্বাসের এই প্রকারের সহাবস্থানকে সামাজিক মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হিসেবে সমালোচনা করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, পরীমণি মন্তব্য করেছেন, “আগে ছয় মাসই হিন্দু, ছয় মাস মুসলিম। এখন ৬ মাস আওয়ামী লীগ, ৬ মাস বিএনপি। এই বিভাজনের জন্য বড় দিদিকে দেখা গেল।” অপুর এই ঘটনা নিয়োজেক অনেকেই তাকে শোকস্তব্ধ করেছেন।
প্রসঙ্গত, অপু বিশ্বাস শাকিব খানের সাথে অভিনীত অনেক ব্যবসাসফল সিনেমায় কাজ করেছেন। তবে তাঁর এই পরিস্থিতি নতুন করে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন পরিচালকের মন্তব্য, এই ধরনের বিষয় তদন্তের দাবি রাখে।
বিভিন্ন শিল্পী ও দর্শক এই ঘটনাকে নিয়ে সোশ্যাল মাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অনেকে বলছেন, পরস্পরের রাজনৈতিক আদর্শের বাইরে থাকতে পারা সম্ভব, কিন্তু এরকম সহাবস্থায় অনেক কিছুই বোঝা যায় না। অন্যদিকে, অনেকের মতে, এই ধরনের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক বিভাজনকে ফুটিয়ে তোলে।
অন্তর্দৃষ্টি আনতে, বোঝা যায় যে, অপু বিশ্বাসের এই কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক উত্তেজনা ও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের মিশ্রণ, যা এখনো বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু बना রয়েছে।