মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে জুয়া ও পতিতাবৃত্তির অভিযোগে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে ৮২৮ বিদেশিকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ করে পতিতাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ বিদেশিকে আটক করেছে ইমিগ্রেশন বিভাগ। এছাড়াও, জুয়া খেলার অপরাধে ৩৭৭ বাংলাদেশিসহ মোট ৭৭০ জন, এবং অন্যান্য বিষয়ে ২১ মিয়ানমারির নাগরিককে আটক করা হয়েছে বলে মালয়েশিয়ার সংবাদ সংস্থা বারনামা জানিয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে এই অভিযান পরিচালিত হয় জালান ইপোহ-এ অবস্থিত একটি তিন তারকা হোটেলে। অভিযানের সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাল টুকরো, ছয়টি থাই পাসপোর্ট, তিনটি ভিয়েতনামী পাসপোর্ট, তিনটি ইন্দোনেশিয়ান পাসপোর্ট এবং একটি লাওসিয়ান পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
অভিযানের আরেকটি অংশে একই রাতে নেগেরি সেম্বিলানের নিলাই এলাকায় ২১ মিয়ানমারির নাগরিককে আটক করা হয়। এদের মধ্যে একজনকে ‘প্রাইমিস কেয়ারটেকার’ হিসেবে নির্বাহী করা হয়েছে, আর বাকি ২০ জনকে পরিচারিকা হিসেবে কাজে নিযুক্ত থাকার সন্দেহে আটক করা হয়েছে। তাদের বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছর অনুসারে।
এর আগে, কুয়ালালামপুরের এক অনলাইন জুয়া কেন্দ্রের ওপর অভিযান চালিয়ে ৭৭০ জন বিদেশিকে আটক করে দেশটির অভিবাসন দপ্তর। বারনামা সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়, এর মধ্যে ৩৭৭ জন বাংলাদেশি।
অভিযানের সময় শুরু হয় রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে, দু সপ্তাহের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে। এ অভিযানে অংশ নেন পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন শাখার গোয়েন্দা ও বিশেষ অভিযান বিভাগের সদস্যরা।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান এক বিবৃতিতে বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে মিয়ানমারের ২ নারী, ভারতীয় ১ জন নারী, ইন্দোনেশিয়ার ১ জন পুরুষ এবং ১৭ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, ৯ জন থাই নারী, ৬ জন ভিয়েতনামী নারী, এবং একজন লাওটিয়ান নারী রয়েছেন। বয়সের ব্যাপ্তি ১৯ থেকে ৬১ বছর।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ছয়জন থাই নারী, তিনজন ভিয়েতনামী নারী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান নারী এবং একজন লাওটিয়ান নারী পাসের অপব্যবহার করেছেন। অন্যদিকে, একজন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ অতিরিক্ত সময় থাকায় সন্দেহের তালিকায় ছিলেন। তবে কিছু ব্যক্তির বৈধ ভ্রমণের নথিপত্র ছিল না।
ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিরা হোটেলগুলোকে বিদেশি পতিতাবৃত্তির কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছিল। গ্রাহকরা হোয়াটসঅ্যাপ বা সরাসরি ছবি দেখে নারীদের বাছাই করতে পারতেন, যেখানে প্রতি ঘণ্টায় ২৫০ থেকে ৪০০ রিঙ্গিত করে চার্জ নেওয়া হতো। ধারণা করা হয়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই সিন্ডিকেটটি কার্যক্রম শুরু করে।
বলেন মহাপরিচালক, আইনি প্রক্রিয়ায় ছয়জন থাই, তিনজন ভিয়েতনামী, দুইজন ইন্দোনেশিয়ান ও একজন লাওটিয়ান নারীকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও, দুইজন মিয়ানমারির নারী, একজন ভারতীয় নারী, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী, তিনজন ভিয়েতনামী নারী ও তিনজন থাই নারীকে আইনের ৬(৩) ধারায় আটক করা হয়েছে। এক ব্যক্তিকে আইনের ১৫(৪) ধারায় আটক করা হয়।
সবাইকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন অফিসে নিবন্ধিত করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও স্থানীয় পুরুষদের তদন্তে সহযোগিতার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে।