রাজশাহীর বাঘায় পদ্মা নদীর চর ঘুরে আবারও প্লাবিত হয়েছে। এতে চরের বহু মানুষ গরু-ছাগল নিয়ে বিপদে পড়েছেন। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে আতারপাড়া চরটি জলাবদ্ধতার ভয়াবহ দৃশ্য চোখে পড়েছে।
পদ্মা নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় দূর্দশার মুখে পড়েছেন স্থানীয় শিশুরা। আতারপাড়া ও চৌমাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারছেন না। এই পরিস্থিতির কারণে অনেক শিশু পরিচর্যায় পিছিয়ে পড়ছে।
আতারপাড়া, চৌমাদিয়া, দিঢারকাদিরপুরসহ আশেপাশের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করেছে। এর ফলে প্রায় সবার বাড়ির উঠানে একটার পর একটা পানির স্তর উঠে আসছে। এই পানি প্রবাহের কারণে চরের বাসিন্দারা গরু-ছাগল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
একজন চৌমাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা বলেন, এই চরে বর্তমানেও কমপক্ষে ২০০ পরিবার বসবাস করে। প্রতিটি বাড়ির উঠানে নতুন করে পানি ঢুকেছে। তারা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন, কোথাও যেতে পারছেন না। গরু-ছাগল নিয়ে পরিবারগুলো সর্বোচ্চ বিপদে পড়েছেন।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আবদুর রহমান বলেন, চরের মোট আয়তন প্রায় ৪৬ কিলোমিটার, যেখানে বসবাস করেন সাড়ে ১৫ হাজার মানুষ। এই চরে ৬ হাজার একরের জমি এবং প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ বাস করেন। জীবন বাজি রেখে মানুষ এই চরেও বসবাস করছেন। কিন্তু নদীর ভাঙনে সব কিছু চলে গেছে, এখন আবার পদ্মার পানিতে ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি বারবার জানিয়েছি, দ্রুত সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ দরকার।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার এনামুল হক জানান, রবিবার ভোর ৮টার সময় পদ্মা নদীর পানি উচ্চতা ১৬.৮২ মিটার, যা বিপৎসীমার ১৮.৫ মিটার থেকে এখনও অনেক নিচে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবগত। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
সুতরাং, পরিস্থিতি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এই বন্যা পরিস্থিতি যেমন মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে, তেমনি জীবন ও সম্পদের ক্ষতি এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সতর্কতা ও সহায়তা প্রয়োজন।