আন্তর্জাতিক ফুটবল মাঠে আর্জেন্টিনা বনাম ভেনেজুয়েলা ম্যাচটি ছিল বিশেষ এক মুহূর্তের সাক্ষী। লিওনেল মেসি, যিনি নিজেকে ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, এই ম্যাচে তার কৃতিত্ব ও আবেগের সবটুকু ছড়িয়ে দিলেন। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের জন্য তিনি সম্ভাব্য শেষ ম্যাচের জন্য খুবই উত্তেজিত ছিলেন। আজ (শুক্রবার) তিনি পুরো পরিবারের সঙ্গে এস্তাদিও মনুমেন্তালে উপস্থিত হয়েছিলেন। দর্শকদের অভিবাদন পেয়ে চোখে পানি এসে গিয়েছিল তার, যা তার আবেগপ্রবণ মনকে আরও আবেগি করে তোলে। এরপর মাঠে নেমে দারুণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ম্যাচের চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করেন তিনি। দুই গোলের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত ১১৪ তম গোলও পূর্ণ করেন এই মহাতারকা। তার সহকর্মী লাউতারো মার্টিনেজের একটি গোলের সাহায্যে আর্জেন্টিনা শেষ পর্যন্ত ৩-০ ব্যবধানে ভেনেজুয়েলাকে হারিয়ে দেয়। মুখে এক অনন্দের হাসি নিয়ে মাঠে পা রাখেন মেসি, ওয়ার্ম-আপ ও জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন তিনি সতীর্থদের সাথে আবেগপ্রবণ ছিলেন। খেলার শুরুতেই আর্জেন্টিনার দাঁড়ানো ছিল দারুণ অপ্রতিরোধ্য। ম্যাচে বল দখল ছিল স্বাগতিক দলের শতকরা ৭৭ ভাগ, যেখানে মেসি-আলভারেজ-আলমাদারা মিলিয়ে ১৭টি শট নেন, যার মধ্যে ৯টি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে ভেনেজুয়েলা দল মাত্র ৫ শটের মধ্যে একটিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই ক্রিস্টিয়ান রোমেরো হেডে গোল করার সুযোগ পেলে, তবে অফসাইডের জন্য বাতিল হয়। ১৫ মিনিটের পর খেলায় কিছুটা ধীরগতি দেখা যায়, কিন্তু ৩৮ মিনিটে লিয়ন্দ্রো পারেদেসের ক্রসে এসে হুলিয়ান আলভারেজ গোল করে প্রথম এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বিরতির আগে, অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে লিওনেল মেসি লম্বা পা বাড়িয়ে গোল করেন, যা দর্শকদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে দেয়। দ্বিতীয়ার্ধে ৬০ মিনিটে আরেকটি সুযোগ পান মেসি, কিন্তু গোলরক্ষক তা প্রতিরোধ করেন। এর পরই আর্জেন্টিনা পুরো দখল নেয় মাঠের দখল। দ্বিতীয় গোলটি আসে দুই পরিবর্তি খেলোয়ার নিকো গঞ্জালেস ও লাউতারো মার্টিনেজের কল্যাণে। লাউতারো মার্টিনেজ দ্বিতীয় মিনিটে গোল করে স্কোরশিটে নাম লেখান, তারপর চার মিনিট পরে, মেসি আসেন তার ব্যক্তিগত ১১৪তম গোলের অঙ্কে। এই গোলের মাধ্যমে তিনি দলের জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচের শেষের দিকে, রেফারির কিছু সিদ্ধান্তের কারণে মেসি হ্যাটট্রিকের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন, যখন তিনি অফসাইডে ছিলেন। তবুও, এই ম্যাচটি ছিল তার জন্য অন্যতম ভিন্ন এক অনুভূতি, যা তার ক্যারিয়ারে একটি বিশেষ স্মৃতি হয়ে থাকল। নিজে এবং দেশের জন্য তার অবদানের জন্য তিনি দর্শকদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান করে নিয়েছেন। আজকের এই জয় ও উত্সবের মাধ্যমে একদিকে যেমন তিনি তার প্রশংসা পেলেন, অন্যদিকে তার ইতিহাসে আরও এক অনন্য अध्यায় যুক্ত হলো।