ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের সমাধানে সম্ভাব্য পথ নিয়ে আলোচনা করতে সোমবার বা মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় নেতা যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, শিগগিরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও তিনি আলোচনায় বসবেন। ট্রাম্পের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে এবং মস্কোর ওপর দ্বিতীয় ধাপের কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য প্রস্তুত। খবর বিবিসি থেকে।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই উদ্যোগকে ‘সঠিক সিদ্ধান্ত’ হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলোকে রুশ জ্বালানি কেনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্য দিকে, রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলার শুরু থেকেই সবচেয়ে ব্যাপক আঘাত হানা চালিয়েছে। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন এবং প্রথমবারের মতো কিয়েভের কেন্দ্রীয় ভবনেও আঘাত লেগেছে। রাশিয়া এই হামলায় ৮১০টির বেশি ড্রোন ও ১৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল বলে জানা গেছে। ট্রাম্প এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমি পুরো পরিস্থিতিতে বেশ উদ্বিগ্ন। তিনি জানিয়েছেন, সোমবার বা মঙ্গলবার বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা যুক্তরাষ্ট্রে আসবেন, তবে কারা আসছেন তা স্পষ্টভাবে বলেননি।
গত মাসে আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের শীর্ষ বৈঠকের পর থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে আরও কঠোর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগঠন এখনও রাশিয়ার তেল ও গ্যাস ক্রয় বন্ধ করেনি, যা অবশ্যই পরিবর্তন হওয়া উচিত। তিনি আরও যোগ করেন, রাশিয়া থেকে যেকোনো ধরনের জ্বালানি কেনা বন্ধ করতে হবে, কারণ যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে সব ধরণের ব্যবসা ও চুক্তি বন্ধ করতে হবে।
তাদের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনাও স্বাগত জানিয়েছেন জেলেনস্কি, যাতে রাশিয়ার যুদ্ধের অর্থায়ন বন্ধ করা যায়। তিনি বলেন, যারা এখনো রুশির সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ওপর শুল্ক বসানো উচিত।
থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার’ এর হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের মার্চ থেকে রাশিয়া প্রায় ৯৮৫ বিলিয়ন ডলারের তেল ও গ্যাস বিক্রি করেছে। তাদের প্রধান ক্রেতা হলো চীন ও ভারত। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার জ্বালানি কেনাদিচ্ছে বেশ কমে গেছে, কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ করেনি। তবে, ২০২৭ সালের মধ্যে ব্রাসেলস ঘোষণা করেছে সব কিনাকাটা বন্ধ করার। এরই মধ্যে, ভারত গত মাসে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র ৫০ শতাংশ আরোপ করেছে। ভারত বলছে, তারা নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থে সেরা চুক্তি করবে।
অন্যদিকে, বেইজিংয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে জানানো হয়েছে, তারা চীনে গ্যাস সরবরাহ বাড়াবে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এনবিসিকে বলেছেন, রাশিয়ার তেল কিনে এমন দেশগুলোর ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের বিষয়ে আরও একটুখানি সাহযোগিতা চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় দেশগুলো যদি নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক বাড়ায়, তবে রাশিয়ার অর্থনীতি একেবারে ভেঙে পড়বে এবং সেটিই পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনবে।